রুদ্রচণ্ড
তারে নিয়ে খেলা শুধু এক কাজ ছিল,
পৃথিবীতে আর কিছু ছিল না আমার,
তাহারি জীবন ছিল আমার জীবন—
এ মুহূর্ত্তে মরে গেল সেই বৎস মোর!
তারি নাম রুদ্রচণ্ড, আমি কেহ নই।
আয়, ছুরি, আয় তবে, প্রভু গেছে তোর—
এ শূন্য আসন তাঁর ভেঙে ফেল্‌ তবে।
বিঁধাইয়া বিঁধাইয়া
ভেঙে ফেল্‌, ভেঙে ফেল্‌, ভেঙে ফেল্‌ তবে।
অমিয়ার প্রবেশ
অমিয়া।      পিতা, পিতা, অমিয়ারে ক্ষমা কর পিতা!
চমকিয়া স্তব্ধ
রুদ্রচণ্ড।    আয় মা অমিয়া মোর, কাছে আয় বাছা!
এত দিন পিতা তোর ছিল না এ দেহে,
আজ সে সহসা হেথা এসেছে ফিরিয়া।
অমিয়া, মলিন বড়ো মুখখানি তোর!
আহা বাছা, কত কষ্ট পেলি এ জীবনে!
আর তোরে দুঃখ পেতে হবে না, বালিকা,
পাষণ্ড পিতার তোর ফুরায়েছে দিন।
অমিয়া।     রুদ্রচণ্ডকে আলিঙ্গন করিয়া—
ও কথা বোলো না পিতা, বোলো না, বোলো না—
অমিয়ার এ সংসারে কেহ নাই আর।
তাড়ায়ে দিয়েছে মোরে সমস্ত সংসার,
এসেছি পিতার কোলে বড়ো শ্রান্ত হয়ে।
যেথা তুমি যাবে পিতা যাব সাথে সাথে,
যা তুমি বলিবে মোর সকলি শুনিব,
তোমারে তিলেক-তরে ছাড়িব না আর।
রুদ্রচণ্ড।    আয় মা আমার তুই থাক্‌ বুকে থাক্‌।
সমস্ত জীবন তোরে কত কষ্ট দিনু!
এখন সময় মোর ফুরায়ে এসেছে,