রুদ্রচণ্ড
দ্বাদশ দৃশ্য
রুদ্রচণ্ড।     এখনো তো কিছু তার পেনু না সংবাদ
পৃথ্বীরাজ মরেছে কি রয়েছে বাঁচিয়া।
হীন প্রাণ, কবে তোর ফুরাইবে কাজ!
ঋণ-করা প্রাণ আর বহিতে পারি না,
কবে তোরে ত্যাগ ক’রে বাঁচিব আবার!
ছিছি, তোর লাগি আমি ভিক্ষা করিলাম,
জীবন নামেতে এক মরণ পাইনু!
অদৃষ্ট রে, আরো কি চাহিস করিবারে?
অনুগ্রহ ’পরে মোর জীবন রাখিলি!
অনুগ্রহ— শিশু চাঁদ, তার অনুগ্রহ!
একটি দূতের প্রবেশ
দূত।     বন্দী পৃথ্বীরাজ আজ হত হয়েছেন।
রুদ্রচণ্ড।     [চমকিয়া]—
হত? সে কি কথা? মিথ্যা বলিস নে মূঢ়!
মরে নি সে, মরে নি, মরে নি পৃথ্বীরাজ।
এখনো আছে এ ছুরি, আছে এ হৃদয়,
বল্‌ তুই, এখনো সে আছে পৃথ্বীরাজ।
কোথা যাস বল্‌ তুই এখনো সে আছে!
দূত।     সহসা উন্মাদ আজি হলে নাকি তুমি?
বন্দীভাবে পৃথ্বীরাজ হত হয়েছেন
যারে বলি সেই মোরে মারিতে উদ্যত,
কিন্তু হেন রোষ আমি দেখি নি তো কারো।
[প্রস্থান
রুদ্রচণ্ড।    ছুরি নিক্ষেপ করিয়া —
মুহূর্ত্তে জগৎ মোর ধ্বংস হ’য়ে গেল।
শূন্য হয়ে গেল মোর সমস্ত জীবন!
পৃথ্বীরাজ মরে নাই, মরেছে যে জন
সে কেবল রুদ্রচণ্ড, আর কেহ নয়।
যে দুরন্ত দৈত্যশিশু দিন রাত্রি ধ’রে
হৃদয়-মাঝারে আমি করিনু পালন,