তাসের দেশ

গোলাম। সকাল থেকে আছি বনে, পলাতকাদের নাম সংগ্রহ করার জন্যে। এখানকার হাওয়া লেগেছে। সম্পাদকীয় স্তম্ভ ভরাতে গিয়ে দেখি, লেখনী দিয়ে ছন্দ ঝরছে। শুনেছি, আধুনিক ডাক্তার এইরকম নিঃসারণকেই বলে ইন্‌ফুলুয়েঞ্জা।

রাজা। কী রকম, একটা নমুনা দেখি।

গোলাম।                             যে দেশে বায়ু না মানে

                বাধ্যতামূলক   বিধি,
সে দেশে দহলা   তত্ত্বনিধি
      কেমনে করিবে   রক্ষা কৃষ্টি—
            সে দেশে নিশ্চিত   অনাসৃষ্টি॥

রাজা। থাক্‌, আর প্রয়োজন নেই। এটা চতুর্থবর্গের পাঠ্য পুস্তকে চালিয়ে দিয়ো। তাসবংশীয় শিশুরা কণ্ঠস্থ করুক।

ছক্কা। রাজাসাহেব, তোমার চতুর্থবর্গের শিশুবিভাগের ছাত্র নই আমরা। আজ হঠাৎ মনে হচ্ছে, আমাদের বয়স হয়েছে। ও ছন্দ মনে লাগছে না।

পঞ্জা। ওগো বিদেশী, সমুদ্রের ওপারের ছন্দ আমাদের কানে দিতে পার?

রাজপুত্র। পারি, তবে শোনো।

গান
গগনে গগনে যায় হাঁকি
    বিদ্যুৎবাণী বজ্রবাহিনী বৈশাখী,
স্পর্ধাবেগের ছন্দ জাগায়
      বনস্পতির শাখাতে।
শূন্যমদের নেশায় মাতাল ধায় পাখি,
    অচিন পথের ছন্দ উড়ায়
      মুক্ত বেগের পাখাতে।
অন্তরতল মন্থন করে ছন্দে
    সাদার কালোর দ্বন্দ্বে,
        নানা ভালো নানা মন্দে,
নানা সোজা নানা বাঁকাতে।
  ছন্দ নাচিল হোমবহ্নির তরঙ্গে,
     মুক্তিরণের যোদ্ধৃবীরের ভ্রূভঙ্গে,
       ছন্দ ছুটিল প্রলয়পথের
          রুদ্ররথের চাকাতে॥

রাজা। কিছু বুঝলে তোমরা?

তাসের দল। কিছুই না।

রাজা। তবে?

তাসের দল। মন মেতে উঠল।

রাজা। সেটা তো ভালো নয়। আমাদের সনাতন শাসেত্রর ছন্দ একটা শোনো—