তাসের দেশ

দহলা। অর্থ নেই— নিয়ম।

ছক্কা। নিয়ম যদি নাই মানি?

দহলা। অধঃপাতে যাবে।

ছক্কা। যাব সেই অধঃপাতেই।

দহলা। কী করতে।

পঞ্জা। সেখানে যদি অগৌরব থাকে তার সঙ্গে লড়াই করতে।

দহলা। এ কেমন গোঁয়ারের কথা শান্তিপ্রিয় দেশে!

পঞ্জা। শান্তিভঙ্গ করব পণ করেছি।

হরতনীর প্রবেশ

দহলা। শুনছ, শ্রীমতী হরতনী? এরা শান্তি ভাঙতে চায় আমাদের এই অতলস্পর্শ প্রশান্তমহাসাগরের ধারে।

হরতনী। আমাদের শান্তিটা বুড়ো গাছে মতো। পোকা লেগেছে ভিতরে ভিতরে, সেটা নির্জীব, তাকে কেটে ফেলা চাই।

দহলা। ছি ছি ছি ছি, এমন কথা তোমার মুখে বেরোল! তুমি নারী, রক্ষা করবে শান্তি; আমরা পুরুষ রক্ষা করব কৃষ্টি।

হরতনী। অনেকদিন তোমরা আমাদের ভুলিয়েছ, পণ্ডিত। আর নয়, তোমাদের শান্তিরসে হিম হয়ে জমে গেছে আমাদের রক্ত, আর ভুলিয়ো না।

দহলা। সর্বনাশ! কার কাছ থেকে পেলে এ-সব কথা।

হরতনী। মনে মনে তাকেই তো ডাকছি। আকাশে শুনতে পাচ্ছি তারই গান।

দহলা। সর্বনাশ। আকশে গান! এবার মজল তাসের দেশ। আর এখানে নয়।

[ প্রস্থান

ছক্কা। সুন্দরী, তুমিই আমাদের পথ দেখাও।

পঞ্জা। অশান্তিমন্ত্র পেয়েছ তুমি, সেই মন্ত্র দাও আমাদের।

হরতনী। বিধাতার ধিক্কারের মধ্যে আছি আমরা, মূঢ়তার অপমানে। চলো, বেরিয়ে পড়ি।

ছক্কা। একটু নড়লেই যে ওরা দোষ ধরে, বলে ‘অশুচি’।

হরতনী। দোষ হয় হোক, কিন্তু মরে থাকার মতো অশুচিতা নেই।

[ প্রস্থান
ইস্কাবনী ও টেক্কানী ফুল তুলছে

টেক্কানী। ঐ-রে, দহলানী এসেছে। আর রক্ষে নেই।

দহলানীর প্রবেশ

দহলানী। লুকোচ্ছ কোথায়। কে গো, চেনা যায় না যে! এ-যে আমাদের টেক্কানী। আর, উনি কে, উনি যে আমাদের ইস্কাবনী। মরে যাই। কী ছিরি করেছ! মানুষ সেজেছ বুঝি? লজ্জা নেই?

টেক্কানী। সাজি নি, দৈবাৎ সাজ খসে পড়েছে।