প্রকৃতির প্রতিশোধ
          আজ করেছি মনে।
ওগো,    পীতধড়া পরিয়ে তারে
          কোলে নিয়ে আয়।
তার    হাতে দিয়ো মোহন বেণু,
          নূপুর দিয়ো পায়।
       রোদের বেলায় গাছের তলায়
          নাচব মোরা সবাই মিলে।
       বাজবে নূপুর রুনুঝুনু
          বাজবে বাঁশি মধুর বোলে।
       বনফুলে গাঁথব মালা,
          পরিয়ে দিব শ্যামের গলে।


[প্রস্থান
বালক-পুত্র সমেত স্ত্রীলোকের প্রবেশ

স্ত্রীলোক। ( ব্রাহ্মণ পথিকের প্রতি ) হ্যাঁগা দাদাঠাকুর, এত ব্যস্ত হয়ে কম্‌নে চলেছ?

ব্রাহ্মণ। আজ শিষ্যবাড়ি চলেছি নাতনি। অনেকগুলি ঘর আজকের মধ্যে সেরে আসতে হবে, তাই সকাল সকাল বেরিয়েছি। তুমি কোথায় যাচ্ছ গা?

স্ত্রীলোক। আমি ঠাকুরের পুজো দিতে যাব। ঘরকন্নার কাজ ফেলে এসেছি, মিনসে আবার রাগ করবে। পথে দু দণ্ড দাঁড়িয়ে যে জিগ্‌গেসপড়া করব তার জো নেই। বলি দাদাঠাকুর, আমাদের ও দিকে যে এক বার পায়ের ধুলো পড়ে না!

ব্রাহ্মণ। আর ভাই, বুড়োসুড়ো হয়ে পড়েছি, তোদের এখন নবীন বয়েস, কী জানি পছন্দ না হয়। যার দাঁত পড়ে গেছে, তার চালকড়াইভাজার দোকানে না যাওয়াই ভালো।

স্ত্রীলোক। নাও, নাও, রঙ্গ রেখে দাও।

আর এক স্ত্রীলোক। এই-যে ঠাকুর, আজকাল তুমি যে বড়ো মাগ্‌গি হয়েছ।

ব্রাহ্মণ। মাগ্‌গি আর হলেম কই। সক্কালবেলায় পথের মধ্যে তোরা পাঁচ জনে মিলে আমাকে টানাছেঁড়া আরম্ভ করেছিস। তবু তো আমার সেকাল নেই।

প্রথমা। আমি যাই ভাই, ঘরের সমস্ত কাজ পড়ে রয়েছে।

দ্বিতীয়া। তা এস।

প্রথমা। (পুনর্বার ফিরিয়া) হ্যাঁলা অলঙ্গ, তোদের পাড়ায় সেই-যে কথাটা শুনেছিলুম, সে কি সত্যি!

দ্বিতীয়া। সে ভাই বেস্তর কথা।

[সকলের চুপি চুপি কথোপকথন