প্রকৃতির প্রতিশোধ
আর-কতকগুলি পথিকের প্রবেশ

প্রথম। আমাকে অপমান! আমাকে চেনে না সে! তার কাঁধে কটা মাথা আছে দেখতে হবে! তার ভিটেমাটি উচ্ছন্ন করে তবে ছাড়ব।

দ্বিতীয়। ঠিক কথা। তা না হলে তো সে জব্দ হবে না।

প্রথম। জব্দ বলে জব্দ! তাকে নাকের জলে চোখের জলে করব।

তৃতীয়। শাবাশ দাদা, একবার উঠেপড়ে লাগো তো।

চতুর্থ। লোকটার বড়ো বাড় বেড়েছে।

পঞ্চম। পিঁপিড়ার পাখা ওঠে মরিবার তরে।

দ্বিতীয়। অতি দর্পে হত লঙ্কা।

চতুর্থ। আচ্ছা, তুমি কী করবে শুনি দাদা!

দ্বিতীয়। কী না করতে পারি! গাধার উপরে চড়িয়ে মাথায় ঘোল ঢালিয়ে শহর ঘুরিয়ে বেড়াতে পারি। তার এক গালে চুন এক গালে কালি লাগিয়ে দেশ থেকে দূর করে দিতে পারি, তার ভিটেয় ঘুঘু চরাতে পারি।


[ক্রোধে প্রস্থান। হাসিতে হাসিতে অন্য পথিকগণের অনুগমন


প্রথম স্ত্রী। মাইরি, দাদাঠাকুর, আর হাসতে পারি নে, তোমার রঙ্গ রেখে দাও। ওমা, বেলা হয়ে গেল। আজ আর মন্দিরে যাওয়া হল না। আবার আর-এক দিন আসতে হবে। (সক্রোধে) পোড়ারমুখো ছেলে, তোর জন্যেই তো যাওয়া হল না, তুই আবার পথের মধ্যে খেলতে গিয়েছিলি কোথা?

ছেলে। কেন মা, আমি তো এইখেনেই ছিলেম।

স্ত্রী। ফের আবার নেই করছিস!

[প্রহার, ক্রন্দন ও প্রস্থান
দুই জন ব্রাহ্মণ-বটুর প্রবেশ

প্রথম। মাধব শাস্ত্রীরই জয়।

দ্বিতীয়। কখনো না, জনার্দন পণ্ডিতই জয়ী।

প্রথম। শাস্ত্রী বলছেন স্থূল থেকে সূক্ষ্ম উৎপন্ন হয়েছে।

দ্বিতীয়। গুরু জনার্দন বলছেন, সূক্ষ্ম থেকে স্থূল উৎপন্ন হয়েছে।

প্রথম। সে যে অসম্ভব কথা।

দ্বিতীয়। সেই তো বেদবাক্য।

প্রথম। কেমন করে হবে! বৃক্ষ থেকে তো বীজ।

দ্বিতীয়। দূর মূর্খ, বীজ থেকেই তো বৃক্ষ।

প্রথম। আগে দিন না আগে রাত?

দ্বিতীয়। আগে রাত।

প্রথম। কেমন করে! দিন না গেলে তো রাত হবে না!