বন-ফুল
     পাখী এক গেল উড়ে নীল নভোতলে,
     ফেনখণ্ড গেল ভেসে নীল নদীজলে,
দিবা ভাবি অতিদূরে    আকাশ সুধায় পূরে
     ডাকিয়া উঠিল এক প্রমুগ্ধ পাপিয়া।
পিউ, পিউ, শূন্যে ছুটে    উচ্চ হতে উচ্চে উঠে—
     আকাশ সে সূক্ষ্ম স্বরে উঠিল কাঁপিয়া।

বসিয়া গণিল বালা    কত ঢেউ করে খেলা,         
     কত ঢেউ দিগন্তের আকাশে মিলায়,
কত ফেন করি খেলা    লুটায়ে চুম্বিছে বেলা,
     আবার তরঙ্গে চড়ি সুদূরে পলায়।

দেখি দেখি থাকি থাকি    আবার ফিরায়ে আঁখি
     নীরদের মুখপানে চাহিল সহসা—
আধেক মুদিত নেত্র    অবশ পলকপত্র—
     অপূর্ব মধুর ভাবে বালিকা বিবশা!

নীরদ ক্ষণেক পরে উঠে চমকিয়া,
     অপূর্ব স্বপন হতে জাগিল যেন রে।
দূরেতে সরিয়া গিয়া থাকিয়া থাকিয়া
     বালিকারে সম্বোধিয়া কহে মৃদুস্বরে—
‘সে কী কথা শুধাইছ বিপিনরমণী!
     ভালবাসি কিনা আমি তোমারে কমলে?
পৃথিবী হাসিয়া যে লো উঠিবে এখনি!
     কলঙ্ক রমণী নামে রটিবে তা হলে?

ও কথা শুধাতে আছে?    ও কথা ভাবিতে আছে!
     ও-সব কি স্থান দিতে আছে মনে মনে?
বিজয় তোমার স্বামী    বিজয়ের পত্মী তুমি
     সরলে! ও কথা তবে শুধাও কেমনে?

     তবুও শুধাও যদি দিব না উত্তর!—
হৃদয়ে যা লিখা আছে    দেখাবো না কারো কাছে,