বন-ফুল
অচেতনে শোক জ্বালা রয়েছে পাশরি!
রুক্ষ রুক্ষ
কেশরাশি
বুকের উপরে আসি
থেকে থেকে কাঁপি উঠে নিশ্বাসের ভরে!
বাঁহাত
আঁচল-'পরে
অবশ রয়েছে পড়ে
এলো কেশরাশি মাঝে সঁপি ডান করে।
ছাড়ি বালিকার
কর
ত্রস্ত উঠে পান্থবর
দ্রুতগতি চলিলেন তটিনীর ধারে,
নদীর শীতল
নীরে
ভিজায়ে বসন ধীরে
ফিরি আইলেন পুন কুটীরের দ্বারে।
বালিকার মুখে
চোখে
শীতল সলিল-সেকে
সুধীরে বালিকা পুন মেলিল নয়ন।
মুদিতা
নলিনীকলি
মরমহুতাশে জ্বলি
মুরছি সলিলকোলে পড়িল যেমন—
সদয়া নিশির
মন
হিম সেঁচি সারাক্ষণ
প্রভাতে ফিরায়ে তারে দেয় গো চেতন।
মেলিয়া
নয়নপুটে
বালিকা চমকি উঠে
একদৃষ্টে পথিকেরে করে নিরীক্ষণ।
পিতা মাতা ছাড়া
কারে মানুষে
দেখে নি হা রে,
বিস্ময়ে পথিকে তাই করিছে লোকন!
আঁচল গিয়াছে
খ'সে,
অবাক্ রয়েছে ব'সে
বিস্ফারি পথিক-পানে যুগল নয়ন!
দেখেছে কভু কেহ
কি
এহেন মধুর আঁখি?
স্বর্গের কোমল জ্যোতি খেলিছে নয়নে—
মধুর-স্বপনে-মাখা
সারল্য-প্রতিমা-আঁকা
‘কে তুমি গো?’ জিজ্ঞাসিছে যেন
প্রতিক্ষণে।
পৃথিবী-ছাড়া এ
আঁখি
স্বর্গের আড়ালে থাকি
পৃথ্বীরে জিজ্ঞাসে ‘কে তুমি?কে তুমি?'
মধুর মোহের
ভুল,
এ মুখের নাই তুল—
স্বর্গের বাতাস বহে এ মুখটি চুমি!
পথিকের হৃদে
আসি
নাচিছে শোণিত রাশি,
অবাক্ হইয়া বসি রয়েছে সেথায়!