ভুজ-পাশ-বদ্ধ অ্যান্টনি

এই তো আমরা দোঁহে বসে আছি কাছে কাছে!

একটি ভুজঙ্গ - ভুজে আমারে জড়ায়ে আছে ;

আরেকটি শ্যাম-বাহু, শতেক মুকুতা ঝুলে,

সোনার মদিরা পাত্র আকাশে রয়েছে তুলে।

অলকের মেঘ মাঝে জ্বলিতেছে মুখখানি,

          রূপের মদিরা পিয়া

          আবেশে অবশ হিয়া,

পড়েছে মাতাল হয়ে, কখন্‌ কিছু না জানি!

রাখিয়া বক্ষের পরে অবশ চিবুক মোর,

হাসিতেছি তার পানে, হৃদয়ে আঁধার ঘোর!

বাতায়ন-যবনিকা, বাতাস, সরায়ে ধীরে

বীজন করিছে আসি এ মোর তাপিত শিরে।

          সম্মুখেতে দেখা যায়

          পীতবর্ণ বালুকায়

অস্তগামী রবিকর আদূর ‘ নীলের ' তীরে।

চেয়ে আছি, দেখিতেছি, নদীর সুদূর পারে,

          (কী জানি কিসের দুখ!)

          পশ্চিম দিকের মুখ

বিষণ্ন হইয়া আসে সন্ধ্যার আঁধার ভারে।

প্রদোষ তারার মুখে হাসি আসি   উঁকি মারে!

রোমীয় স্বপন এক জাগিছে সম্মুখে মোর,

ঘুরিছে মাথার মাঝে, মাথায় লেগেছে ঘোর।

রোমীয় স্মর-অসত্র ঝঞ্ঝনিয়া উঠে বাজি,

বিস্ফারিত নাসা চাহে রণ-ধূম পিতে আজি।

কিন্তু হায়! অমনি সে মুখ্‌ পানে হেসে চায়,

          কী জানি কী হয় মতি,

          হীন প্রমোদের প্রতি।

বীরের ভ্রূকুটিগুলি তখনি মিলায়ে যায়!

গরবিত, শূন্য হিয়া, জর্জর আবেশ-বাণে,

যে প্রমোদ ঘৃণা করি হেসে চাই তারি পানে।