দুর্বোধ

অধ্যাপকমশায় বোঝাতে গেলেন নাটকটার অর্থ,

      সেটা হয়ে উঠল বোধের অতীত।

          আমার সেই নাটকের কথা বলি।—

 

      বইটার নাম ‘পত্রলেখা',

               নায়ক তার কুশলসেন।

            নবনীর কাছে বিদায় নিয়ে সে গেল বিলেতে।

                চার বছর পরে ফিরে এসে হবে বিয়ে।

                    নবনী কাঁদল উপুড় হয়ে বিছানায়,

          তার মনে হল, এ যেন চার বছরের মৃতুদণ্ড।

 

নবনীকে কুশলের প্রয়োজন ছিল না ভালোবাসার পথে,

        প্রয়োজন ছিল সুগম করতে বিলাত - যাত্রার পথ।

                সে কথা জানত নবনী,

সে পণ করেছিল হৃদয় জয় করবে প্রাণপণ সাধনায়।

                কুশল মাঝে মাঝে

রুচিতে বুদ্ধিতে উঁচট খেয়ে ওকে হঠাৎ বলেছে রূঢ় কথা,

                ও সয়েছে চুপ করে ;

      মেনে নিয়েছে নিজেকে অযোগ্য বলে,

            ওর নালিশ নিজেরই উপরে।

ভেবেছিল দীনা বলেই একদিন হবে ওর জয়,

    ঘাস যেমন দিনে দিনে নেয় ঘিরে কঠোর পাহাড়কে।

         এ যেন ছিল ওর ভালোবাসার শিল্পরচনা,

নির্দয় পাথরটাকে ভেঙে ভেঙে রূপ আবাহন করা

      ব্যথিত বক্ষের নিরন্তর আঘাতে।

আজ নবনীর সেই দিনরাতের আরাধনার ধন গেল দূরে।

      ওর দুঃখের থালাটি ছিল অশ্রু - ভেজা অর্ঘ্যে ভরা,

আজ থেকে দুঃখ রইবে কিন্তু দুঃখের নৈবেদ্য রইবে না।

 

       এখন ওদের সম্বন্ধের পথ রইল