শ্যামলী

   শুধু এ পারে ও পারে চিঠি লেখার সাঁকো বেয়ে ।

কিন্তু নবনী তো সাজিয়ে লিখতে জানে না মনের কথা,

     ও কেবল যত্নের স্বাদ লাগাতে জানে সেবাতে,

         অর্‌কিডের চমক দিয়ে যেতে ফুলদানির ‘পরে

                   কুশলের চোখের আড়ালে,

         গোপনে বিছিয়ে আসতে

                 নিজের - হাতে - কাজ - করা আসন

                           যেখানে কুশল পা রাখে।

 

কুশল ফিরল দেশে,

     বিয়ের দিন করল স্থির।

  আঙটি এনেছে বিলেত থেকে,

               গেল সেটা পরাতে ;

  গিয়ে দেখে ঠিকানা না রেখেই নবনী নিরুদ্দেশ।

 

            তার ডায়ারিতে আছে লেখা,

       “ যাকে ভালোবেসেছি সে ছিল অন্য মানুষ,

            চিঠিতে যার প্রকাশ, এ তো সে নয়। ”

                 এ দিকে কুশলের বিশ্বাস

                       তার চিঠিগুলি গদ্যে মেঘদূত,

                          বিরহীদের চিরসম্পদ।

                       আজ সে হারিয়েছে প্রিয়াকে,

            কিন্তু মন গেল না চিঠিগুলি হারাতে —

      ওর মমতাজ পালালো, রইল তাজমহল।

নাম লুকিয়ে ছাপালো চিঠি ‘উদ্‌ভ্রান্তপ্রেমিক' আখ্যা দিয়ে

                  নবনীর চরিত্র নিয়ে

            বিশ্লেষণ ব্যাখ্যা হয়েছে বিস্তর।

            কেউ বলেছে, বাঙালির মেয়েকে

                     লেখক এগিয়ে নিয়ে চলেছে

            ইবসেনের মুক্তিবাণীর দিকে —

                          কেউ বলেছে রসাতলে।