তিন

ফুরিয়ে গেল পৌষের দিন ;

   কৌতূহলী ভোরের আলো

            কুয়াশার আবরণ দিলে সরিয়ে।

হঠাৎ দেখি শিশিরে-ভেজা বাতাবি গাছে

           ধরেছে কচি পাতা ;

                  সে যেন আপনি বিস্মিত।

একদিন তমসার কূলে বাল্মীকি

             আপনার প্রথম নিশ্বসিত ছন্দে

             চকিত হয়েছিলেন নিজে,

                 তেমনি দেখলেম ওকে।

অনেকদিনকার নিঃশব্দ অবহেলা থেকে

             অরুণ-আলোতে অকুণ্ঠিত বাণী এনেছে

                      এই কয়টি কিশলয় ;

             সে যেন সেই একটুখানি কথা

                      যা তুমিই বলতে পারতে,

                         কিন্তু না ব ' লে গিয়েছ চলে।

 

             সেদিন বসন্ত ছিল অনতিদূরে ;

                         তোমার আমার মাঝখানে ছিল

                                 আধ-চেনার যবনিকা ;

                         কেঁপে উঠল সেটা মাঝে মাঝে ;

মাঝে মাঝে তার একটা কোণ গেল উড়ে ;

           দুরন্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ বাতাস,

                  তবু সরাতে পারেনি অন্তরাল।

                      উচ্ছৃঙ্খল অবকাশ ঘটল না ;

                               ঘণ্টা গেল বেজে,

সায়াহ্নে তুমি চলে গেলে অব্যক্তের অনালোকে।