নীহারিকা

বাদল-শেষের আবেশ আছে ছুঁয়ে

                   তমালছায়াতলে,

সজনে গাছের ডাল পড়েছে নুয়ে

                   দিঘির প্রান্তজলে।

        অস্তরবির-পথ-তাকানো মেঘে

        কালোর বুকে আলোর বেদন লেগে —

                   কেন এমন খনে

         কে যেন সে উঠল হঠাৎ জেগে

                   আমার শূন্য মনে।

 

“ কে গো তুমি, ওগো ছায়ায় লীন ”

                   প্রশ্ন পুছিলাম।

সে কহিল, “ ছিল এমন দিন

                   জেনেছ মোর নাম।

        নীরব রাতে নিসুত দ্বিপ্রহরে

        প্রদীপ তোমার জ্বেলে দিলেম ঘরে,

                   চোখে দিলেম চুমো ;

        সেদিন আমায় দেখলে আলস-ভরে

                   আধ-জাগা আধ-ঘুমো।

 

আমি তোমার খেয়ালস্রোতে তরী,

                   প্রথম-দেওয়া খেয়া —

মাতিয়েছিলেম শ্রাবণশর্বরী

                   লুকিয়ে-ফোটা কেয়া।

        সেদিন তুমি নাও নি আমায় বুঝে,

        জেগে উঠে পাও নি ভাষা খুঁজে,

                   দাও নি আসন পাতি —

        সংশয়িত স্বপন-সাথে যুঝে

                   কাটল তোমার রাতি।