পত্রপুট

                     নেমেছে তেজোময়ী লহরী,

                             দিয়েছে আমার নাড়ীতে

                                 অনির্বচনীয়ের স্পন্দন।

 

     আমার চৈতন্যে গোপনে দিয়েছে নাড়া

         অনাদিকালের কোন্‌ অস্পষ্ট বার্তা,

       প্রাচীন সূর্যের বিরাট বাষ্পদেহে বিলীন

                      আমার অব্যক্ত সত্তার রশ্মিস্ফুরণ।

                   হেমন্তের রিক্তশস্য প্রান্তরের দিকে চেয়ে

                          আলোর নিঃশব্দ চরণধ্বনি

                             শুনেছি আমার রক্ত-চাঞ্চল্যে।

                   সেই ধ্বনি আমার অনুসরণ করেছে

                      জন্মপূর্বের কোন্‌ পুরাতন কালযাত্রা থেকে।

বিস্ময়ে আমার চিত্ত প্রসারিত হয়েছে অসীম কালে

                           যখন ভেবেছি

                 সৃষ্টির আলোকতীর্থে

         সেই জ্যোতিতে আজ আমি জাগ্রত

     যে জ্যোতিতে অযুত নিযুত বৎসর পূর্বে

                           সুপ্ত ছিল আমার ভবিষ্যৎ।

  আমার পূজা আপনিই সম্পূর্ণ হয়েছে প্রতিদিন

                                        এই জাগরণের আনন্দে।

       আমি ব্রাত্য, আমি মন্ত্রহীন,

                  রীতিবন্ধনের বাহিরে আমার আত্মবিস্মৃত পূজা    

                              কোথায় হল উৎসৃষ্ট জানতে পারি নি।

 

       যখন বালক ছিলেম ছিল না কেউ সাথি,

                         দিন কেটেছে একা একা

                                চেয়ে চেয়ে দূরের দিকে।

                 জন্মেছিলেম অনাচারের অনাদৃত সংসারে,

                         চিহ্ন-মোছা, প্রাচীরহারা।

                প্রতিবেশীর পাড়া ছিল ঘন বেড়ায় ঘেরা,

                        আমি ছিলেম বাইরের ছেলে, নাম-না-জানা।