গরবিনী

কে গো তুমি গরবিনী, সাবধানে থাকো দূরে দূরে,

মর্তধূলি - ' পরে ঘৃণা বাজে তব নূপুরে নূপুরে।

     তুমি যে অসাধারণ, তীব্র একা তুমি,

          আকাশকুসুমসম অসংসক্ত রয়েছ কুসুমি।

              বাহিরের প্রসাধনে যত্ন তুমি শুচি ;

                  অকলঙ্ক তোমার কৃত্রিম রুচি ;

         সর্বদা সংশয়ে থাকো পাছে কোথা হতে

   হতভাগ্য কালো কীট পড়ে তব দীপের আলোতে

                   স্ফটিকেতে - ঢাকা

                 অসামান্য সমাদরে আঁকা

                   তোমার জীবন

          কৃপণের - কক্ষে - রাখা ছবির মতন

                   বহুমূল্য যবনিকা অন্তরালে ;

ওগো অভাগিনী নারী, এই ছিল তোমার কপালে—

     আপন প্রহরী তুমি, নিজে তুমি আপন বন্ধন।

 

                           আমি সাধারণ।

                   এ ধরাতলের

                              নির্বিচার স্পর্শ সকলের

                   দেহে মোর বহে যায়, লাগে মোর মনে—

               সেই বলে বলী আমি, স্বত্ব মোর সকল ভুবনে।

                             মুক্ত আমি ধূলিতলে,

                        মুক্ত আমি অনাদৃত মলিনের দলে।

          যত চিহ্ন লাগে দেহে, অশঙ্কিত প্রাণের শক্তিতে

                           শুদ্ধ হয়ে যায় সে চকিতে।

 

                   সম্মুখে আমার দেখো শালবন,

                        সে যে সাধারণ।

                   সবার একান্ত কাছে

                        আপনাবিস্মৃত হয়ে আছে।