পত্রপুট

                       গিরিশিখরের পাগলা-ঝোরা পোষ মেনেছে

                             গিরিপদতলের বোবা জলরাশিতে —

                       বন্দী ভুলেছে আপনার উদ্‌বেলকে, উদ্দামকে —

  পাথর ডিঙিয়ে আপন সীমানা চূর্ণ করতে করতে নিরুদ্দেশের পথে

                   অজানার সংঘাতে বাঁকে বাঁকে

                      গর্জিত করল না সে আপন অবরুদ্ধ বাণী,

             আবর্তে আবর্তে উৎক্ষিপ্ত করল না

                                 অন্তর্গূঢ়কে।

 

 

       মৃত্যুর গ্রন্থি থেকে ছিনিয়ে ছিনিয়ে

                যে উদ্ধার করে জীবনকে

        সেই রুদ্র মানবের আত্মপরিচয়ে বঞ্চিত

                          ক্ষীণ পাণ্ডুর আমি

             অপরিস্ফুটতার অসন্মান নিয়ে যাচ্ছি চলে।

 

 

দুর্গম ভীষণের ওপারে

          অন্ধকারে অপেক্ষা করছে জ্ঞানের বরদাত্রী ;

মানবের অভ্রভেদী বন্ধনশালা

           তুলেছে কালো পাথরে গাঁথা উদ্ধত চূড়া

                                      সূর্যোদয়ের পথে ;

           বহু শতাব্দীর ব্যথিত ক্ষত মুষ্টি

                       রক্তলাঞ্ছিত বিদ্রোহের ছাপ

                   লেপে দিয়ে যায় তার দ্বারফলকে ;

ইতিহাসবিধাতার শ্রেষ্ঠ সম্পদ

                   দৈত্যের লৌহদুর্গে প্রচ্ছন্ন ;

   আকাশে দেবসেনাপতির কন্ঠ শোনা যায় ——

                       ‘ এসো মৃত্যুবিজয়ী '।

         বাজল ভেরী,

   তবু জাগল না রণদুর্মদ

         এই নিরাপদ নিশ্চেষ্ট জীবনে ;