বারো

     বসেছি অপরাহ্নে পারের খেয়াঘাটে

                   শেষধাপের কাছটাতে।

            কালো জল নিঃশব্দে বয়ে যাচ্ছে পা ডুবিয়ে দিয়ে।

জীবনের পরিত্যক্ত ভোজের ক্ষেত্র পড়ে আছে পিছন দিকে

            অনেক দিনের ছড়ানো উচ্ছিষ্ট নিয়ে।

        মনে পড়ছে ভোগের আয়োজনে

                            ফাঁক পড়েছে বারম্বার।

        কতদিন যখন মূল্য ছিল হাতে

                           হাট জমে নি তখনো,

                    বোঝাই নৌকো লাগল যখন ডাঙায়

        তখন ঘণ্টা গিয়েছে বেজে,

                ফুরিয়েছে বেচাকেনার প্রহর।

 

 

অকালবসন্তে জেগেছিল ভোরের কোকিল ;

                   সেদিন তার চড়িয়েছি সেতারে,

                            গানে বসিয়েছি সুর।

       যাকে শোনাব তার চুল যখন হল বাঁধা,

                  বুকে উঠল জাফরানি রঙের আঁচল

                         তখন ঝিকিমিকি বেলা,

                         করুণ ক্লান্তি লেগেছে মূলতানে।

    ক্রমে ধূসর আলোর উপরে কালো মরচে পড়ে এল।

থেমে-যাওয়া গানখানি নিভে-যাওয়া প্রদীপের ভেলার মতো

                 ডুবল বুঝি কোন্‌ একজনের মনের তলায়,

                            উঠল বুঝি তার দীর্ঘনিশ্বাস,

                               কিন্তু জ্বালানো হল না আলো।

 

 

        এ নিয়ে আজ নালিশ নেই আমার।

              বিরহের কালোগুহা ক্ষুধিত গহ্বর থেকে