তিন

             আজ আমার প্রণতি গ্রহণ করো, পৃথিবী,

                শেষ নমস্কারে অবনত দিনাবসানের বেদিতলে। 

 

      মহাবীর্যবতী , তুমি বীরভোগ্যা,

             বিপরীত তুমি ললিতে কঠোরে,

                মিশ্রিত তোমার প্রকৃতি পুরুষে নারীতে ;

      মানুষের জীবন দোলায়িত কর তুমি দুঃসহ দ্বন্দ্বে।

                ডান হাতে পূর্ণ কর সুধা

                       বাম হাতে চূর্ণ কর পাত্র,

      তোমার লীলাক্ষেত্র মুখরিত কর অট্টবিদ্রূপে ;

      দুঃসাধ্য কর বীরের জীবনকে মহৎজীবনে যার অধিকার।

                শ্রেয়কে কর দুর্মূল্য,

                       কৃপা কর না কৃপাপাত্রকে।

      তোমার গাছে গাছে প্রচ্ছন্ন রেখেছ প্রতি মুহূর্তের সংগ্রাম,

             ফলে শস্যে তার জয়মাল্য হয় সার্থক।

          জলে স্থলে তোমার ক্ষমাহীন রণরঙ্গভূমি,

      সেখানে মৃত্যুর মুখে ঘোষিত হয় বিজয়ী প্রাণের জয়বার্তা।

      তোমার নির্দয়তার ভিত্তিতে উঠেছে সভ্যতার জয়তোরণ,

          ত্রুটি ঘটলে তার পূর্ণ মূল্য শোধ হয় বিনাশে।

 

      তোমার ইতিহাসের আদিপর্বে দানবের প্রতাপ ছিল দুর্জয়,

                          সে পরুষ, সে বর্বর, সে মূঢ়।

                    তার অঙ্গুলি ছিল স্থূল, কলাকৌশলবর্জিত ;

      গদা-হাতে মুষল-হাতে লন্ডভন্ড করেছে সে সমুদ্র পর্বত ;

                    অগ্নিতে বাষ্পেতে দুঃস্বপ্ন ঘুলিয়ে তুলেছে আকাশে।

                          জড়রাজত্বে সে ছিল একাধিপতি,

                                প্রাণের'পরে ছিল তার অন্ধ ঈর্ষা।

 

      দেবতা এলেন পরযুগে —

                             মন্ত্র পড়লেন দানবদমনের,