হা বিধাতা— ছেলেবেলা হতেই এমন

হা বিধাতা — ছেলেবেলা হতেই এমন

দুর্বল হৃদয় লয়ে লভেছি জনম,

আশ্রয় না পেলে কিছু, হৃদয় আমার

অবসন্ন হয়ে পড়ে লতিকার মতো।

স্নেহ-আলিঙ্গন-পাশে বদ্ধ না হইলে

কাঁদে ভূমিতলে পড়ে হয়ে ম্রিয়মাণ।

তবে হে ঈশ্বর! তুমি কেন গো আমারে

ঐশ্বর্যের আড়ম্বরে করিলে নিক্ষেপ ;

যেখানে সবারি হৃদি যন্ত্রের মতন ;

স্নেহ প্রেম হৃদয়ের বৃত্তি সমুদয়

কঠোর নিয়মে যেথা হয় নিয়মিত।

কেন আমি হলেম না কৃষক-বালক,

ভায়ে ভায়ে মিলে মিলে করিতাম খেলা,

গ্রামপ্রান্তে প্রান্তরের পর্ণের কুটিরে

পিতামাতা ভাইবোন সকলে মিলিয়া

স্বাভাবিক হৃদয়ের সরল উচ্ছ্বাসে,

মুক্ত ওই প্রান্তরের বায়ুর মতন

হৃদয়ের স্বাধীনতা করিতাম ভোগ।

শ্রান্ত হলে খেলা-সুখে সন্ধ্যার সময়ে

কুটিরে ফিরিয়া আসি ভালোবাসি যারে

তার স্নেহময় কোলে রাখিতাম মাথা,

তা হইলে দ্বেষ ঘৃণা মিথ্যা অপবাদ

মুহূর্তে মুহূর্তে আর হত না সহিতে।

হৃদয়বিহীন প্রাসাদের আড়ম্বর

গর্বিত এ নগরের ঘোর কোলাহল

কৃত্রিম এ ভদ্রতার কঠোর নিয়ম

ভদ্রতার কাষ্ঠ হাসি, নহে মোর তরে।

দরিদ্র গ্রামের সেই ভাঙাচোরা পথ,

গৃহস্থের ছোটোখাটো নিভৃত কুটির

যেখানে কোথা বা আছে, তৃণ রাশি রাশি,