ভারতী

শুধাই অয়ি গো ভারতী তোমায়

          তোমার ও বীণা নীরব কেন?

কবির বিজন মরমে লুকায়ে

          নীরবে কেন গো কাঁদিছ হেন?

অযতনে, আহা, সাধের বীণাটি

          ঘুমায়ে রয়েছে কোলের কাছে,

অযতনে, আহা, এলোথেলো চুল

          এদিকে-ওদিকে ছড়িয়ে আছে।

কেন গো আজিকে এ-ভাব তোমার

          কমলবাসিনী ভারতী রানী —

মলিন মলিন বসন ভূষণ

          মলিন বদনে নাহিকো বাণী।

তবে কি জননি অমৃতভাষিণি

          তোমার ও বীণা নীরব হবে?

ভারতের এই গগন ভরিয়া

          ও বীণা আর না বাজিবে তবে?

দেখো তবে মাতা দেখো গো চাহিয়া

          তোমার ভারত শ্মশান-পারা,

ঘুমায়ে দেখিছে সুখের স্বপন

          নরনারী সব চেতনহারা।

যাহা-কিছু ছিল সকলি গিয়াছে,

          সে-দিনের আর কিছুই নাই,

বিশাল ভারত গভীর নীরব,

          গভীর আঁধার যে-দিকে চাই।

তোমারো কি বীণা ভারতি জননী,

          তোমারো কি বীণা নীরব হবে?

ভারতের এই গগন ভরিয়া

          ও-বীণা আর না বাজিবে তবে?

না না গো, ভারতী, নিবেদি চরণে

          কোলে তুলে লও মোহিনী বীণা।