প্রকৃতির খেদ
[দ্বিতীয় পাঠ]

বিস্তারিয়া ঊর্মিমালা, সুকুমারী শৈলবালা

        অমল সলিলা গঙ্গা অই বহি যায় রে।

প্রদীপ্ত তুষাররাশি, শুভ্র বিভা পরকাশি

        ঘুমাইছে স্তব্ধভাবে গোমুখীর শিখরে।

ফুটিয়াছে কমলিনী অরুণের কিরণে।

নির্ঝরের এক ধারে, দুলিছে তরঙ্গ-ভরে

        ঢুলে ঢুলে পড়ে জলে প্রভাত পবনে।

হেলিয়া নলিনী-দলে প্রকৃতি কৌতুকে দোলে

        গঙ্গার প্রবাহ ধায় ধুইয়া চরণ।

ধীরে ধীরে বায়ু আসি দুলায়ে অলকরাশি

        কবরী কুসুমগন্ধ করিছে হরণ।

বিজনে খুলিয়া প্রাণ, সপ্তমে চড়ায়ে তান,

        শোভনা প্রকৃতিদেবী গা ' ন ধীরে ধীরে।

নলিনী-নয়নদ্বয়, প্রশান্ত বিষাদময়

        মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস বহিল গভীরে। —

‘ অভাগী ভারত হায় জানিতাম যদি —

বিধবা হইবি শেষে, তা হলে কি এত ক্লেশে

তোর তরে অলংকার করি নিরমাণ।

তা হলে কি হিমালয়, গর্বে-ভরা হিমালয়,

দাঁড়াইয়া তোর পাশে, পৃথিবীরে উপহাসে,

তুষারমুকুট শিরে করি পরিধান।

তা হলে কি শতদলে তোর সরোবরজলে

হাসিত অমন শোভা করিয়া বিকাশ,

কাননে কুসুমরাশি, বিকাশি মধুর হাসি,

প্রদান করিত কি লো অমন সুবাস।

তা হলে ভারত তোরে, সৃজিতাম মরু করে

        তরুলতা-জন-শূন্য প্রান্তর ভীষণ।

প্রজ্বলন্ত দিবাকর বর্ষিত জ্বলন্ত কর