তপতী

নরেশ। এত সহজে?

বিপাশা। আমি অনাগতকে দেখতে পাচ্ছি।

নরেশ। কী দেখতে পেলে।

বিপাশা। জালন্ধরের রানীর সম্মান তুমি উদ্ধার করবে। চুপ করে রইলে কেন কুমার।

নরেশ। কথা বলবার সময় এখনো আসে নি।

বিপাশা। আমি বলি কথা বলবার সময় এখন চলে গেছে।


গান
আলোক-চোরা লুকিয়ে এল ওই,
তিমিরজয়ী বীর, তোরা আজ কই।
          এই কুয়াশা-জয়ের দীক্ষা
              কাহার কাছে লই।
মলিন হল শুভ্র বরন,
অরুণ সোনা করল হরণ,
লজ্জা পেয়ে নীরব হল
              উষা জ্যোতির্ময়ী।
সুপ্তিসাগর-তীর বেয়ে সে
              এসেছে মুখ ঢেকে,
              অঙ্গে কালি মেখে।
রবির রশ্মি, কই গো তোরা,
কোথায় আঁধার-ছেদন ছোরা,
উদয়শৈলশৃঙ্গ হতে
              বল্‌ মাভৈঃ মাভৈঃ॥

নরেশ। এ গান কোথায় পেলে বিপাশা?

বিপাশা। কাশ্মীরে মার্তণ্ডদেবের মন্দিরে আমরা এ গান গাই হেমন্তে গিরিশিখরে যখন আলোকরাজ্যে অরাজকতা আসে।

নরেশ। এ গান আমাকে শোনালে যে?

বিপাশা। এখানকার ক্লিষ্ট আকাশে তুমিই আলোকের দূত। যাক মীনকেতুর বেদী ভেঙে, সেখানে তোমার আসন ধরবে না, রুদ্রভৈরবের নির্মাল্য আনব তোমার জন্যে। এখানে তিনি ভৈরব কাশ্মীরে তিনিই মার্তণ্ড, সেই দেবতাকে প্রসন্ন করো বীর। আজ সকালে আর্তত্রাণের জন্যে যে কৃপাণ খুলেছিলে একবার দাও আমার হাতে। (তলোয়ার কপালে ঠেকিয়ে) রুদ্রের তৃতীয় চক্ষুতে তুমিই অগ্নি, প্রভাতমার্তণ্ডের দীপ্ত দৃষ্টিতে তুমিই রৌদ্রচ্ছটা, বীরের হাতে তুমি কৃপাণ, তোমাকে নমস্কার।


      জাগো হে রুদ্র জাগো।
সুপ্তিজড়িত তিমিরজাল
      সহে না সহে না গো।