তপতী
এসো নিরুদ্ধ দ্বারে
বিমুক্ত করো তারে,
তনুমনপ্রাণ ধনজনমান
      হে মহাভিক্ষু মাগো॥

রাজকুমার, ঐ দেখো!

নরেশ। সেই আমার পদ্মের কুঁড়ি! এখনো রেখেছ?

বিপাশা। এ আজ কথা কয়েছে— কাশ্মীরের হৃদয় জেগেছে এর মধ্যে।

নরেশ। ঐ আসছেন মন্ত্রীর সঙ্গে রাজা। আমাকে হয়তো প্রয়োজন আছে — তুমি মন্দির-প্রাঙ্গণে অপেক্ষা করো।

[ বিপাশার প্রস্থান
বিক্রম ও মন্ত্রীর প্রবেশ

বিক্রম। প্রজারা বিদ্রোহী? কোথায়।

মন্ত্রী। বুধকোটে সিংহগড়ে।

বিক্রম। ক্ষমার কথা বোলো না। অক্ষমের স্পর্ধা সব চেয়ে ক্ষমার অযোগ্য।

নরেশ। বস্তুত ওদের বিদ্রোহ বিদেশী সামন্তদের বিরুদ্ধে।

বিক্রম। তারা কি আমার প্রতিনিধি নয়।

নরেশ। তখন নয় যখন তারা নিজের স্বার্থ দেখে, প্রজার নয়, রাজার নয়। আমাকে আদেশ করো আমি প্রজাদের শান্ত করে আসি।

বিক্রম। তুমি! আমার শাসন আলগা করেছ তোমরাই। প্রজাদের প্রশ্রয়ে মহারানীর সঙ্গে যোগ দিয়েছ তুমিই, বিদেশীর প্রতি ঈর্ষা তোমার মতো এমন স্পষ্ট করে প্রকাশ করতে কেউ সাহস করে নি। প্রতিহারী, মহারানী কোথায়। আমার আহ্বান এখনই তাঁকে জানাও গে। তিনি শুনুন তাঁর দয়াদৃপ্ত প্রজারা আজ বিদ্রোহ করেছে— ভীরুরা বিদ্রোহ করতে সাহস করেছে তাঁর ভরসায়। কিন্তু তিনি ওদের বাঁচাতে পারবেন? বিচার সর্বাগ্রে তাঁকেই গ্রহণ করতে হবে। এখনই, এখানেই। মন্ত্রী, তোমরা অপবাদ দিয়ে এসেছ আমার চিত্ত দুর্বল, রানীর প্রতি অন্ধ আমার প্রেম। আজ দেখাব তোমরা ভুল করেছ। তোমাদের মহারানীরও বিচার হবে। নির্বাসন দিতে পারি নে ভাবছ? আমাদের বংশ রামচন্দ্রের, সূর্যবংশ।

মন্ত্রী। মহারাজ।

বিক্রম। কী, বলো। স্তব্ধ হয়ে রইলে কেন?

মন্ত্রী। সামন্তরাজদের সৈন্যদল নিকটবর্তী। শিলাদিত্য তাদের সেনাপতি।

বিক্রম। সিংহাসনের প্রতি লক্ষ?

মন্ত্রী। হাঁ মহারাজ।

বিক্রম। প্রতিরোধের কী ব্যবস্থা করেছ।

মন্ত্রী। সৈন্য প্রস্তুত নেই, তাদের সকলকে বিশ্বাস করাও কঠিন।

নরেশ। আমাকে ভার দিন মহারাজ। দ্বিধা করবার সময় নেই। আমি সৈন্য প্রস্তুত করিগে।