আরোগ্য

ওপারে ধানের খেতে।

অদূরে বনের ঊর্ধ্বে মন্দিরের চূড়া

ঝলিছে প্রভাত-রৌদ্রালোকে।

মাঠের অদৃশ্য পারে চলে রেলগাড়ি

ক্ষীণ হতে ক্ষীণতর

ধ্বনিরেখা টেনে দিয়ে বাতাসের বুকে,

পশ্চাতে ধোঁয়ায় মেলি

দূরত্বজয়ের দীর্ঘ বিজয়পতাকা।

 

মনে এল, কিছুই সে নয়, সেই বহুদিন আগে,

দু ' পহর রাতি,

নৌকা বাঁধা গঙ্গার কিনারে।

জ্যোৎস্নায় চিক্কণ জল,

ঘনীভূত ছায়ামূর্তি নিষ্কম্প অরণ্যতীরে-তীরে,

ক্কচিৎ বনের ফাঁকে দেখা যায় প্রদীপের শিখা।

সহসা উঠিনু জেগে।

শব্দশূন্য নিশীথ-আকাশে

উঠিছে গানের ধ্বনি তরুণ কন্ঠের,

ছুটিছে ভাঁটির স্রোতে তন্বী নৌকা তরতর বেগে।

মুহূর্তে অদৃশ্য হয়ে গেল ;

দুই পারে স্তব্ধ বনে জাগিয়া রহিল শিহরণ ;

চাঁদের-মুকুট-পরা অচঞ্চল রাত্রির প্রতিমা

রহিল নির্বাক্‌ হয়ে পরাভূত ঘুমের আসনে।

 

 

পশ্চিমের গঙ্গাতীর, শহরের শেষপ্রান্তে বাসা,

দূর প্রসারিত চর

শূন্য আকাশের নীচে শূন্যতার ভাষ্য করে যেন।

হেথা হোথা চরে গোরু শস্যশেষ বাজরার খেতে ;

তর্‌মুজের লতা হতে

ছাগল খেদায়ে রাখে কাঠি হাতে কৃষাণ-বালক।

কোথাও বা একা পল্লীনারী