পুনশ্চ

                 এ দেশের মাটিতে অনেক যত্নে বাঁচে। '

                     জিগেস করলেম, ‘নামটা কী?'

                         সে বললে ‘ক্যামেলিয়া'।

             চমক লাগল —

      আর-একটা নাম ঝলক দিয়ে উঠল মনের অন্ধকারে।

         হেসে বললেম, ‘ ক্যামেলিয়া,

         সহজে বুঝি এর মন মেলে না। '

তনুকা কী বুঝলে জানি নে, হঠাৎ লজ্জা পেলে,

                         খুশিও হল।

         চললেম টবসুদ্ধ গাছ নিয়ে।

দেখা গেল পার্শ্ববর্তিনী হিসাবে সহযাত্রিণীটি সহজ নয়।

         একটা দো-কামরা গাড়িতে

                 টবটাকে লুকোলেম নাবার ঘরে।

             থাক্‌ এই ভ্রমণবৃত্তান্ত,

বাদ দেওয়া যাক আরো মাস কয়েকের তুচ্ছতা।

 

পুজোর ছুটিতে প্রহসনের যবনিকা উঠল

                 সাঁওতাল পরগনায়।

             জায়গাটা ছোটো। নাম বলতে চাই নে —

      বায়ু বদলের বায়ু-গ্রস্তদল এ জায়গার খবর জানে না।

             কমলার মামা ছিলেন রেলের এঞ্জিনিয়র।

                  এইখানে বাসা বেঁধেছেন

      শালবনে ছায়ায়, কাঠবিড়ালিদের পাড়ায়।

সেখানে নীল পাহাড় দেখা যায় দিগন্তে,

         অদূরে জলধারা চলেছে বালির মধ্যে দিয়ে,

পলাশবনে তসরের গুটি ধরেছে,

         মহিষ চরছে হর্তকি গাছের তলায় —

             উলঙ্গ সাঁওতালের ছেলে পিঠের উপরে।

বাসাবাড়ি কোথাও নেই,

         তাই তাঁবু পাতলেম নদীর ধারে।

             সঙ্গী ছিল না কেউ,

      কেবল ছিল টবে সেই ক্যামেলিয়া।