ক্যামেলিয়া

                নাম তার কমলা,

         দেখেছি তার খাতার উপরে লেখা।

সে চলেছিল ট্রামে, তার ভাইকে নিয়ে কলেজের রাস্তায়।

                 আমি ছিলেম পিছনের বেঞ্চিতে।

      মুখের এক পাশের নিটোল রেখাটি দেখা যায়,

আর ঘাড়ের উপর কোমল চুলগুলি খোঁপার নীচে।

          কোলে তার ছিল বই আর খাতা।

      যেখানে আমার নামবার সেখানে নামা হল না।

 

এখন থেকে সময়ের হিসাব করে বেরোই —

         সে হিসাব আমার কাজের সঙ্গে ঠিকটি মেলে না,

      প্রায় ঠিক মেলে ওদের বেরোবার সময়ের সঙ্গে,

                     প্রায়ই হয় দেখা।

      মনে মনে ভাবি, আর-কোনো সম্বন্ধ না থাক্‌,

         ও তো আমার সহযাত্রিণী।

      নির্মল বুদ্ধির চেহারা

             ঝক্‌ঝক্‌ করছে যেন।

         সুকুমার কপাল থেকে চুল উপরে তোলা,

                 উজ্জ্বল চোখের দৃষ্টি নিঃসংকোচ।

মনে ভাবি একটা কোনো সংকট দেখা দেয় না কেন,

              উদ্ধার করে জন্ম সার্থক করি —

                 রাস্তার মধ্যে একটা কোনো উৎপাত,

                     কোনো-একজন গুণ্ডার স্পর্ধা।

             এমন তো আজকাল ঘটেই থাকে।

কিন্তু আমার ভাগ্যটা যেন ঘোলা জলের ডোবা,

      বড়ো রকম ইতিহাস ধরে না তার মধ্যে,

              নিরীহ দিনগুলো ব্যাঙের মতো একঘেয়ে ডাকে —

না সেখানে হাঙর-কুমিরের নিমন্ত্রণ, না রাজহাঁসের।