অবর্জিত

আমি চলে গেলে ফেলে রেখে যাব পিছু

চিরকাল মনে রাখিবে এমন কিছু,

          মূঢ়তা করা তা নিয়ে মিথ্যে ভেবে।

ধুলোর খাজনা শোধ করে নেবে ধুলো,

চুকে গিয়ে তবু বাকি রবে যতগুলো

          গরজ যাদের তারাই তা খুঁজে নেবে।

আমি শুধু ভাবি, নিজেরে কেমনে ক্ষমি —

পুঞ্জ পুঞ্জ বকুনি উঠেছে জমি,

          কোন্‌ সৎকারে করি তার সদ্‌গতি।

কবির গর্ব নেই মোর হেন নয় —

কবির লজ্জা পাশাপাশি তারি রয়,

          ভারতীর আছে এই দয়া মোর প্রতি।

লিখিতে লিখিতে কেবলি গিয়েছি ছেপে,

সময় রাখি নি ওজন দেখিতে মেপে,

          কীর্তি এবং কুকীর্তি গেছে মিশে।

ছাপার কালিতে অস্থায়ী হয় স্থায়ী,

এ অপরাধের জন্যে যে জন দায়ী

          তার বোঝা আজ লঘু করা যায় কিসে।

বিপদ ঘটাতে শুধু নেই ছাপাখানা,

বিদ্যানুরাগী বন্ধু রয়েছে নানা —

           আবর্জনারে বর্জন করি যদি

চারি দিক হতে গর্জন করি উঠে,

‘ঐতিহাসিক সূত্র দিবে কি টুটে,

          যা ঘটেছে তারে রাখা চাই নিরবধি।’

ইতিহাস বুড়ো, বেড়াজাল তার পাতা,

সঙ্গে রয়েছে হিসাবের মোটা খাতা —

          ধরা যাহা পড়ে ফর্দে সকলি আছে।

হয় আর নয়, খোঁজ রাখে শুধু এই,

ভালোমন্দর দরদ কিছুই নেই,

          মূল্যের ভেদ তুল্য তাহার কাছে।