নবজাতক

বিধাতাপুরুষ ঐতিহাসিক হলে

  চেহারা লইয়া ঋতুরা পড়িত গোলে,

          অঘ্রাণ তবে ফাগুন রহিত ব্যেপে।

পুরানো পাতারা ঝরিতে যাইত ভুলে,

কচি পাতাদের আঁকড়ি রহিত ঝুলে,

          পুরাণ ধরিত কাব্যের টুঁটি চেপে।

জোড়হাত করে আমি বলি, শোনো কথা,

সৃষ্টির কাজে প্রকাশেরই ব্যগ্রতা,

          ইতিহাসটারে গোপন করে সে রাখে।

জীবনলক্ষ্মী মেলিয়া রঙের রেখা

ধরার অঙ্গে আঁকিছে পত্রলেখা,

          ভূতত্ত্ব তার কঙ্কালে ঢাকা থাকে।

বিশ্বকবির লেখা যত হয় ছাপা

প্রুফ্‌শিটে তার দশগুণ পড়ে চাপা,

          নব এডিশনে নূতন করিয়া তুলে।

দাগি যাহা, যাহে বিকার, যাহাতে ক্ষতি,

মমতামাত্র নাহি তো তাহার প্রতি —

          বাঁধা নাহি থাকে ভুলে আর নির্ভুলে।

সৃষ্টির কাজ লুপ্তির সাথে চলে,

ছাপাযন্ত্রের ষড়যন্ত্রের বলে

          এ বিধান যদি পদে পদে পায় বাধা —

জীর্ণ ছিন্ন মলিনের সাথে গোঁজা

কৃপণপাড়ার রাশীকৃত নিয়ে বোঝা

          সাহিত্য হবে শুধু কি ধোবার গাধা।

যাহা কিছু লেখে সেরা নাহি হয় সবি,

তা নিয়ে লজ্জা না করুক কোনো কবি —

          প্রকৃতির কাজে কত হয় ভুলচুক ;

কিন্তু, হেয় যা শ্রেয়ের কোঠায় ফেলে

তারেও রক্ষা করিবার ভূতে পেলে

          কালের সভায় কেমনে দেখাবে মুখ।

ভাবী কালে মোর কী দান শ্রদ্ধা পাবে,

খ্যাতিধারা মোর কত দূর চলে যাবে,