অন্ধকার
উদয়াস্ত দুই তটে অবিচ্ছিন্ন আসন তোমার,
           নিগূঢ় সুন্দর অন্ধকার।
প্রভাত-আলোকচ্ছটা শুভ্র তব আদিশঙ্খধ্বনি
চিত্তের কন্দরে মোর বেজেছিল, একদা যেমনি
           নূতন চেয়েছি আঁখি তুলি;
সে তব সংকেতমন্ত্র ধ্বনিয়াছে, হে মৌনী মহান,
কর্মের তরঙ্গে মোর; স্বপ্ন-উৎস হতে মোর গান
                উঠেছে ব্যাকুলি।

 

নিস্তব্ধের সে আহ্বানে বাহিয়া জীবনযাত্রা মম
           সিন্ধুগামী তরঙ্গিণীসম
এতকাল চলেছিনু তোমারি সুদূর অভিসারে
বঙ্কিম জটিল পথে সুখে দুঃখে বন্ধুর সংসারে
           অনির্দেশ অলক্ষ্যের পানে।
কভু পথতরুচ্ছায়ে খেলাঘর করেছি রচনা,
শেষ না হইতে খেলা চলিয়া এসেছি অন্যমনা
                অশেষের টানে।

 

আজি মোর ক্লান্তি ঘেরি দিবসের অন্তিম প্রহর
           গোধূলির ছায়ায় ধূসর।
হে গম্ভীর, আসিয়াছি তোমার সোনার সিংহদ্বারে
যেখানে দিনান্তরবি আপন চরম নমস্কারে
           তোমার চরণে নত হল।
যেথা রিক্ত নিঃস্ব দিবা প্রাচীন ভিক্ষুর জীর্ণবেশে
নূতন প্রাণের লাগি তোমার প্রাঙ্গণতলে এসে
                বলে ‘দ্বার খোলো’।

 

দিনের আড়ালে থেকে কী চেয়েছি পাই নি উদ্দেশ,
           আজ সে সন্ধান হোক শেষ।
হে চিরনির্মল, তব শান্তি দিয়ে স্পর্শ করো চোখ,