পূরবী
দৃষ্টির সম্মুখে মম এইবার নির্বারিত হোক
           আঁধারের আলোকভাণ্ডার।
নিয়ে যাও সেইখানে নিঃশব্দের গূঢ় গুহা হতে
যেখানে বিশ্বের কণ্ঠে নিঃসরিছে চিরন্তন স্রোতে
                সংগীত তোমার।

 

দিনের সংগ্রহ হতে আজি কোন্‌ অর্ঘ্য নিয়ে যাই
           তোমার মন্দিরে, ভাবি তাই।
কত-না শ্রেষ্ঠীর হাতে পেয়েছি কীর্তির পুরস্কার,
সযত্নে এসেছি বহে সেই-সব রত্ন-অলংকার,
           ফিরিয়াছি দেশ হতে দেশে।
শেষে আজ চেয়ে দেখি, যবে মোর যাত্রা হল সারা,
দিনের আলোর সাথে ম্লান হয়ে এসেছে তাহারা
                তব দ্বারে এসে।

 

রাত্রির নিকষে হায় কত সোনা হয়ে যায় মিছে,
           সে বোঝা ফেলিয়া যাব পিছে।
কিছু বাকি আছে তবু, প্রাতে মোর যাত্রাসহচরী
অকারণে দিয়েছিল মোর হাতে মাধবীমঞ্জরী,
           আজও তাহা অম্লান বিরাজে।
শিশিরের ছোঁয়া যেন এখনো রয়েছে তার গায়,
এ জন্মের সেই দান রেখে দেব তোমার থালায়
                নক্ষত্রের মাঝে।

 

হে নিত্য নবীন, কবে তোমারি গোপন কক্ষ হতে
           পাড়ি দিল এ ফুল আলোতে।
সুপ্তি হতে জেগে দেখি বসন্তে একদা রাত্রিশেষে
অরুণকিরণ সাথে এ মাধুরী আসিয়াছে ভেসে
           হৃদয়ের বিজন পুলিনে।
দিবসের ধুলা এরে কিছুতে পারে নি কাড়িবারে,
সেই তব নিজ দান বহিয়া আনিনু তব দ্বারে,
                তুমি লও চিনে।