কেন

     জ্যোতিষীরা বলে,

সবিতার আত্মদান-যজ্ঞের হোমাগ্নিবেদিতলে

      যে জ্যোতি উৎসর্গ হয় মহারুদ্রতপে

         এ বিশ্বের মন্দিরমণ্ডপে,

          অতিতুচ্ছ অংশ তার ঝরে

     পৃথিবীর অতিক্ষুদ্র মৃৎপাত্রের ’পরে।

         অবশিষ্ট অমেয় আলোকধারা

                   পথহারা,

              আদিম দিগন্ত হতে

         অক্লান্ত চলেছে ধেয়ে নিরুদ্দেশ স্রোতে।

     সঙ্গে সঙ্গে ছুটিয়াছে অপার তিমির-তেপান্তরে

     অসংখ্য নক্ষত্র হয়ে রশ্মিপ্লাবী নিরন্ত নির্ঝরে

                   সর্বত্যাগী অপব্যয়,

         আপন সৃষ্টির ’পরে বিধাতার নির্মম অন্যায়।

     কিংবা এ কি মহাকাল কল্পকল্পান্তের দিনে রাতে

     এক হাতে দান ক’রে ফিরে ফিরে নেয় অন্য হাতে।

         সঞ্চয়ে ও অপচয়ে যুগে যুগে কাড়াকাড়ি যেন —

                            কিন্তু, কেন।

 

     তার পরে চেয়ে দেখি মানুষের চৈতন্যজগতে

     ভেসে চলে সুখদুঃখ কল্পনাভাবনা কত পথে।

         কোথাও বা জ্ব’লে ওঠে জীবন-উৎসাহ,

              কোথাও বা সভ্যতার চিতাবহ্নিদাহ

         নিভে আসে নিঃস্বতার ভস্ম-অবশেষে।

                   নির্ঝর ঝরিছে দেশে দেশে —

     লক্ষ্যহীন প্রাণস্রোতে মৃত্যুর গহ্বরে ঢালে মহী

         বাসনার বেদনার অজস্র বুদ‌্‌বুদ‌্‌পুঞ্জ বহি।

                   কে তার হিসাব রাখে লিখি।

                   নিত্য নিত্য এমনি কি

              অফুরান আত্মহত্যা মানবসৃষ্টির