নবজাতক

                        নিরন্তর প্রলয়বৃষ্টির

                               অশ্রান্ত প্লাবনে।

                           নিরর্থক হরণে ভরণে

                     মানুষের চিত্ত নিয়ে সারাবেলা

              মহাকাল করিতেছে দ্যূতখেলা

                            বাঁ হাতে দক্ষিণ হাতে যেন —

                                      কিন্তু, কেন।

 

     প্রথম বয়সে কবে ভাবনার কী আঘাত লেগে

                   এ প্রশ্নই মনে উঠেছিল জেগে —

              শুধায়েছি, এ বিশ্বের কোন্‌ কেন্দ্রস্থলে

                        মিলিতেছে প্রতি দণ্ডে পলে

                   অরণ্যের পর্বতের সমুদ্রের উল্লোল গর্জন,

                            ঝটিকার মন্দ্রস্বন,

                                        দিবসনিশার

         বেদনাবীণার তারে চেতনার মিশ্রিত ঝংকার,

                   পূর্ণ করি ঋতুর উৎসব

              জীবনের মরণের নিত্যকলরব,

                   আলোকের নিঃশব্দ চরণপাত

         নিয়ত স্পন্দিত করি দ্যুলোকের অস্তহীন রাত।

কল্পনায় দেখেছিনু, প্রতিধ্বনিমণ্ডল বিরাজে

         ব্রহ্মাণ্ডের অন্তরকন্দর-মাঝে।

                     সেথা বাঁধে বাসা

         চতুর্দিক হতে আসি জগতের পাখা-মেলা ভাষা।

সেথা হতে পুরানো স্মৃতিরে দীর্ণ করি

            সৃষ্টির আরম্ভবীজ লয় ভরি ভরি

         আপনার পক্ষপুটে ফিরে-চলা যত প্রতিধ্বনি।

                    অনুভব করেছি তখনি,

     বহু যুগযুগান্তের কোন্‌ এক বাণীধারা

                   নক্ষত্রে নক্ষত্রে ঠেকি পথহারা

         সংহত হয়েছে অবশেষে

                   মোর মাঝে এসে।