বলাকা

পর্বত চাহিল হতে বৈশাখের নিরুদ্দেশ মেঘ ;

              তরুশ্রেণী চাহে, পাখা মেলি

                      মাটির বন্ধন ফেলি

     ওই শব্দরেখা ধরে চকিতে হইতে দিশাহারা,

          আকাশের খুঁজিতে কিনারা।

     এ সন্ধ্যার স্বপ্ন টুটে বেদনার ঢেউ উঠে জাগি

                            সুদূরের লাগি,

                        হে পাখা বিবাগী।

     বাজিল ব্যাকুল বাণী নিখিলের প্রাণে—

     “ হেথা নয়, হেথা নয়, আর কোন্‌খানে। ”

 

              হে হংস-বলাকা,

আজ রাত্রে মোর কাছে খুলে দিলে স্তব্ধতার ঢাকা।

     শুনিতেছি আমি এই নিঃশব্দের তলে

              শূন্যে জলে স্থলে

     অমনি পাখার শব্দ উদ্দাম চঞ্চল।

                            তৃণদল

     মাটির আকাশ-’পরে ঝাপটিছে ডানা ;

     মাটির আঁধার-নীচে, কে জানে ঠিকানা,

              মেলিতেছে অঙ্কুরের পাখা

              লক্ষ লক্ষ বীজের বলাকা।

              দেখিতেছি আমি আজি

                        এই গিরিরাজি,

          এই বন, চলিয়াছে উন্মুক্ত ডানায়

  দ্বীপ হতে দ্বীপান্তরে, অজানা হইতে অজানায়।

              নক্ষত্রের পাখার স্পন্দনে

          চমকিছে অন্ধকার আলোর ক্রন্দনে।

             শুনিলাম মানবের কত বাণী দলে দলে

                        অলক্ষিত পথে উড়ে চলে

  অস্পষ্ট অতীত হতে অস্ফুট সুদূর যুগান্তরে।

              শুনিলাম আপন অন্তরে

                         অসংখ্য পাখির সাথে