পূরবী
মুক্তিমন্দাকিনী এল কূল-ডোবানো স্রোতে;
বললে আমায়
চিত্ত ঘিরে ঘিরে_
ভস্ম আবার ফিরে পাবে জীবন-অগ্নিরে।
বললে— আমি সুরলোকের অশ্রুজলের দান,
মরুর পাথর গলিয়ে ফেলে ফলাই অমর প্রাণ,
মৃত্যুজয়ের ডমরুরব
শোনাই কলস্বরে,
মহাকালের তাণ্ডবতাল সদাই বাজাই উদ্দাম নির্ঝরে।
স্বপ্নসম টুটে
এই কেবিনের দেওয়াল গেল ছুটে।
রোগশয্যা মম
হল উদার কৈলাসেরই শৈলশিখর-সম।
আমার মনপ্রাণ
উঠল গেয়ে রুদ্রেরই
জয়গান।
সুপ্তির জড়িমাঘোরে
তীরে থেকে তোরা ওরে
করেছিস ভয়
যে ঝড় সহসা কানে
বজ্রের গর্জন আনে—
‘নয়, নয়, নয়।’
তোরা বলেছিলি তাকে,
‘বাঁধিয়াছি ঘর।
মিলেছে পাখির ডাকে
তরুর মর্মর।
পেয়েছি তৃষ্ণার জল,
ফলেছে ক্ষুধার ফল,
ভাণ্ডারে হয়েছে ভরা লক্ষ্মীর সঞ্চয়।’
ঝড়, বিদ্যুতের ছন্দে
ডেকে ওঠে মেঘমন্দ্রে—
‘নয়, নয়, নয়।’