বলাকা

          উঠিয়াছে অলক্ষ্যে র পানে

              যেথা তব বিরহিণী   প্রিয়া

                           রয়েছে মিশিয়া

              প্রভাতের অরুণ-আভাসে,

     ক্লান্তসন্ধ্যা দিগন্তের করুণ নিশ্বাসে,

     পূর্ণিমায় দেহহীন চামেলির লাবণ্যবিলাসে,

              ভাষার অতীত তীরে

কাঙাল নয়ন যেথা দ্বার হতে আসে ফিরে ফিরে।

          তোমার সৌন্দর্যদূত যুগ যুগ ধরি

               এড়াইয়া কালের প্রহরী

                     চলিয়াছে বাক্যহারা এই বার্তা নিয়া—

                 “ ভুলি নাই, ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়া। ”

 

              চলে গেছ তুমি আজ

                     মহারাজ ;

          রাজ্য তব স্বপ্নসম গেছে ছুটে,

              সিংহাসন গেছে টুটে ;

                             তব সৈন্যদল

          যাদের চরনভরে ধরণী করিত টলমল

              তাহাদের স্মৃতি আজ বায়ুভরে

              উড়ে যায় দিল্লীর পথের ধূলি-’পরে।

                     বন্দীরা গাহে না গান ;

          যমুনা-কল্লোলসাথে নহবত মিলায় না তান ;

              তব পুরসুন্দরীর নূপুরনিক্কণ

                    ভগ্ন প্রাসাদের কোণে

                    ম’রে গিয়ে ঝিল্লীস্বনে

                             কাঁদায় রে নিশার গগন।

                    তবুও তোমার দূত অমলিন,

                             শ্রান্তিক্লান্তিহীন,

                        তুচ্ছ করি রাজ্য-ভাঙাগড়া,

                      তুচ্ছ করি জীবনমৃত্যুর ওঠাপড়া,

                             যুগে যুগান্তরে