নূতন শ্রোতা

শেষ লেখাটার খাতা

পড়ে শোনাই পাতার পরে পাতা,

অমিয়নাথ স্তব্ধ হয়ে দোলায় মুগ্ধ মাথা।

       উচ্ছ্বসি কয় ; ‘ তোমার অমর কাব্যখানি

নিত্যকালের ছন্দে লেখা সত্যভাষার বাণী। '

দড়িবাঁধা কাঠের গাড়িটারে

নন্দগোপাল ঘটর ঘটর টেনে বেড়ায় সভাঘরের দ্বারে।

         আমি বলি, ‘ থাম্‌ রে বাপু, থাম্‌,

        দুষ্টুমি এর নাম —

পড়ার সময় কেউ কি অমন বেড়ায় গাড়ি ঠেলে।

দেখ্‌ দেখি তোর অমিকাকা কেমন লক্ষ্মীছেলে। '

 

অনেক কষ্টে ভালোমানুষ-বেশে

বসল নন্দ অমিকাকার কোলের কাছে ঘেঁষে।

        দুরন্ত সেই ছেলে

        আমার মুখে ডাগর নয়ন মেলে

চুপ করে রয় মিনিট কয়েক, অমিরে কয় ঠেলে,

       ‘ শোনো অমিকাকা,

       গাড়ির ভাঙা চাকা

সারিয়ে দেবে বলেছিলে, দাও এঁটে ইস্ক্রুপ। '

অমি বললে কানে-কানে, ‘ চুপ চুপ চুপ। '

আবার খানিক শান্ত হয়ে শুনল বসে নন্দ

       কবিবরের অমর ভাষার ছন্দ।

 

একটু পরে উস্‌খুসিয়ে গাড়ির থেকে দশ - বারোটা কড়ি

       মেজের'পরে করলে ছড়াছড়ি।

ঝম্‌ঝমিয়ে কড়িগুলো গুন্‌গুনিয়ে আউড়ে চলে ছড়া —

       এর পরে আর হয় না কাব্য পড়া।