মৌন ভাষা
থাক্‌ থাক্‌, কাজ নাই, বলিয়ো না কোনো কথা।
চেয়ে দেখি, চলে যাই,    মনে মনে গান গাই,
মনে মনে রচি বসে কত সুখ কত ব্যথা।
বিরহী পাখির প্রায়    অজানা কানন-ছায়
উড়িয়া বেড়াক সদা হৃদয়ের কাতরতা—
তারে বাঁধিয়ো না ধরে, বলিয়ো না কোনো কথা।

 

আঁখি দিয়ে যাহা বলো সহসা আসিয়া কাছে
সেই ভালো, থাক্‌ তাই,    তার বেশি কাজ নাই—
কথা দিয়ে বল যদি মোহ ভেঙে যায় পাছে।
এত মৃদু, এত আধো    অশ্রুজলে-বাধো-বাধো
শরমে-সভয়ে-ম্লান এমন কি ভাষা আছে?
কথায় বোলো না তাহা আঁখি যাহা বলিয়াছে।

 

তুমি হয়তো বা পারো আপনারে বুঝাইতে—
মনের সকল ভাষা     প্রাণের সকল আশা
পারো তুমি গেঁথে গেঁথে রচিতে মধুর গীতে।
আমি তো জানি নে মোরে,    দেখি নাই ভালো করে
মনের সকল কথা পশিয়া আপন চিতে—
কী বুঝিতে কী বুঝেছি, কী বলব কী বলিতে।

 

তবে থাক্‌। ওই শোনো, অন্ধকারে শোনা যায়
জলের কল্লোলস্বর     পল্লবের মরমর—
বাতাসের দীর্ঘশ্বাস শুনিয়া শিহরে কায়।
আরো ঊর্ধ্বে দেখো চেয়ে     অনন্ত আকাশ ছেয়ে
কোটি কোটি মৌন দৃষ্টি তারকায় তারকায়।
প্রাণপণ দীর্ঘ ভাষা জ্বলিয়া ফুটিতে চায়।

 

এসো চুপ করে শুনি এই বাণী স্তব্ধতার—
এই অরণ্যের তলে     কানাকানি জলে স্থলে,