মানসী
     এ আঁখি আমার শরীরে তো নাই,
          ফুটেছে মর্মতলে—
     নির্বাণহীন অঙ্গারসম
          নিশিদিন শুধু জ্বলে।
     সেথা হতে তারে উপাড়িয়া লও
          জ্বালাময় দুটো চোখ,
     তোমার লাগিয়া তিয়াষ যাহার
          সে আঁখি তোমারি হোক।

 

     অপার ভুবন, উদার গগন,
          শ্যামল কাননতল,
     বসন্ত অতি মুগ্ধমুরতি,
           স্বচ্ছ নদীর জল,
     বিবিধবরন সন্ধ্যানীরদ,
           গ্রহতারাময়ী নিশি,
     বিচিত্রশোভা শস্যক্ষেত্র
           প্রসারিত দূরদিশি,
     সুনীল গগনে ঘনতর নীল
           অতি দূর গিরিমালা,
     তারি পরপারে রবির উদয়
           কনককিরণ-জ্বালা,
     চকিততড়িৎ সঘন বরষা,
           পূর্ণ ইন্দ্রধনু,
     শরৎ-আকাশে অসীমবিকাশ
           জ্যোৎস্না শুভ্রতনু—
     লও, সব লও, তুমি কেড়ে লও,
           মাগিতেছি অকপটে,
     তিমিরতূলিকা দাও বুলাইয়া
           আকাশ-চিত্রপটে।

 

     ইহারা আমারে ভুলায়ে সতত,
           কোথা নিয়ে যায় টেনে!