যেতে নাহি দিব
          দুয়ারে প্রস্তুত গাড়ি ; বেলা দ্বিপ্রহর ;
            হেমন্তের রৌদ্র ক্রমে হতেছে প্রখর।
            জনশূন্য পল্লিপথে ধূলি উড়ে যায়
            মধ্যাহ্ন-বাতাসে ; স্নিগ্ধ অশত্থের ছায়
            ক্লান্ত বৃদ্ধা ভিখারিণী জীর্ণ বস্ত্র পাতি
             ঘুমায়ে পড়েছে ; যেন রৌদ্রময়ী রাতি
            ঝাঁ ঝাঁ করে চারি দিকে নিস্তব্ধ নিঃঝুম —
            শুধু মোর ঘরে নাহি বিশ্রামের ঘুম।
            গিয়েছে আশ্বিন — পূজার ছুটির শেষে
            ফিরে যেতে হবে আজি বহুদূরদেশে
            সেই কর্মস্থানে। ভৃত্যগণ ব্যস্ত হয়ে
            বাঁধিছে জিনিসপত্র দড়াদড়ি লয়ে,
            হাঁকাহাঁকি ডাকাডাকি এ-ঘরে ও-ঘরে।
            ঘরের গৃহিণী, চক্ষু ছলছল করে,
            ব্যথিছে বক্ষের কাছে পাষাণের ভার,
            তবুও সময় তার নাহি কাঁদিবার
            একদণ্ড তরে ; বিদায়ের আয়োজনে
            ব্যস্ত হয়ে ফিরে ; যথেষ্ট না হয় মনে
            যত বাড়ে বোঝা। আমি বলি, ‘ এ কী কাণ্ড!
            এত ঘট এত পট হাঁড়ি সরা ভাণ্ড
            বোতল বিছানা বাক্স   রাজ্যের বোঝাই
            কী করিব লয়ে   কিছু এর রেখে যাই
            কিছু লই সাথে। '
   
   
                            সে কথায় কর্ণপাত
            নাহি করে কোনো জন। ' কী জানি দৈবাৎ
            এটা ওটা আবশ্যক যদি হয় শেষে
            তখন কোথায় পাবে বিভুঁই বিদেশে?
            সোনামুগ সরু চাল সুপারি ও পান ;