বিচ্ছেদ
      ব্যাকুল নয়ন মোর, অস্তমান রবি,
      সায়াহ্ন মেঘাবনত পশ্চিম গগনে,
      সকলে দেখিতেছিল সেই মুখচ্ছবি—
      একা সে চলিতেছিল আপনার মনে।

 

      ধরণী ধরিতেছিল কোমল চরণ,
      বাতাস লভিতেছিল বিমল নিশ্বাস,
      সন্ধ্যার-আলোক-আঁকা দুখানি নয়ন
      ভুলায়ে লইতেছিল পশ্চিম আকাশ।

 

      রবি তারে দিতেছিল আপন কিরণ,
      মেঘ তারে দিতেছিল স্বর্ণময় ছায়া,
      মুগ্ধহিয়া পথিকের উৎসুক নয়ন
      মুখে তার দিতেছিল প্রেমপূর্ণ মায়া।

 

      চারি দিকে শস্যরাশি চিত্রসম স্থির,
      প্রান্তে নীল নদীরেখা, দূর পরপারে
      শুভ্র চর, আরো দূরে বনের তিমির
      দহিতেছে অগ্নিদীপ্তি দিগন্ত-মাঝারে।

 

      দিবসের শেষ দৃষ্টি— অন্তিম মহিমা—
      সহসা ঘেরিল তারে কনক-আলোকে,
      বিষণ্ন কিরণপটে মোহিনী প্রতিমা
      উঠিল প্রদীপ্ত হয়ে অনিমেষ চোখে।

 

      নিমেষে ঘুরিল ধরা, ডুবিল তপন,
      সহসা সম্মুখে এল ঘোর অন্তরাল—
      নয়নের দৃষ্টি গেল, রহিল স্বপন,
      অনন্ত আকাশ, আর ধরণী বিশাল।