সাগরিকা

সাগরজলে সিনান করি সজল এলোচুলে

       বসিয়াছিলে উপল-উপকূলে।

              শিথিল পীতবাস

মাটির'পরে কুটিলরেখা লুটিল চারি পাশ।

নিরাবরণ বক্ষে তব, নিরাভরণ দেহে

চিকন সোনা-লিখন উষা আঁকিয়া দিল স্নেহে।

মকরচূড় মুকুটখানি পরি ললাট- ' পরে

       ধনুকবাণ ধরি দখিন করে,

              দাঁড়ানু রাজবেশী —

       কহিনু, ‘ আমি এসেছি পরদেশী। '

 

চমকি ত্রাসে দাঁড়ালে উঠি শিলা-আসন ফেলে,

       শুধালে, ‘ কেন এলে। '

       কহিনু আমি, ‘ রেখো না ভয় মনে,

পূজার ফুল তুলিতে চাহি তোমার ফুলবনে। '

       চলিলে সাথে, হাসিলে অনুকূল,

তুলিনু যূথী, তুলিনু জাতী, তুলিনু চাঁপাফুল।

দুজনে মিলি সাজায়ে ডালি বসিনু একাসনে,

          নটরাজেরে পূজিনু একমনে।

কুহেলি গেল, আকাশে আলো দিল-যে পরকাশি

          ধূর্জটির মুখের পানে পার্বতীর হাসি।

 

সন্ধ্যাতারা উঠিল যবে গিরিশিখর- ' পরে

          একেলা ছিলে ঘরে।

কটিতে ছিল নীল দুকূল, মালতীমালা মাথে,

          কাঁকন দুটি ছিল দুখানি হাতে।

          চলিতে পথে বাজায়ে দিনু বাঁশি,

          ‘ অতিথি আমি ', কহিনু দ্বারে আসি।

তরাসভরে চকিতকরে প্রদীপখানি জ্বেলে

           চাহিলে মুখে, কহিলে, ‘ কেন এলে। '