শূন্য গৃহে
       কে তুমি দিয়েছ স্নেহ মানবহৃদয়ে,
           কে তুমি দিয়েছ প্রিয়জন!
বিরহের অন্ধকারে             কে তুমি কাঁদাও তারে,
       তুমি ও কেন গো সাথে কর না ক্রন্দন!

 

       প্রাণ যাহা চায় তাহা দাও বা না দাও,
           তা বলে কি করুণা পাব না?
দুর্লভ ধনের তরে              শিশু কাঁদে সকাতরে,
       তা বলে কি জননীর বাজে না বেদনা?

 

       দুর্বল মানব-হিয়া বিদীর্ণ যেথায়,
           মর্মভেদী যন্ত্রণা বিষম,
জীবন নির্ভরহারা             ধুলায় লুটায়ে সারা,
       সেথাও কেন গো তব কঠিন নিয়ম।

 

       সেথাও জগৎ তব চিরমৌনী কেন,
           নাহি দেয় আশ্বাসের সুখ।
ছিন্ন করি অন্তরাল                   অসীম রহস্যজাল
       কেন না প্রকাশ পায় গুপ্ত স্নেহমুখ!

 

       ধরণী জননী কেন বলিয়া উঠে না
          —করুণমর্মর কণ্ঠস্বর—
“আমি শুধু ধূলি নই,           বৎস, আমি প্রাণময়ী
       জননী, তোদের লাগি অন্তর কাতর।

 

       “নহ তুমি পরিত্যক্ত অনাথ সন্তান
           চরাচর নিখিলের মাঝে;
তোমার ব্যাকুল স্বর              উঠিছে আকাশ-’পর,
       তারায় তারায় তার ব্যথা গিয়ে বাজে।’