পরিচয়

তখন বর্ষণহীন অপরাহ্নমেঘে

            শঙ্কা ছিল জেগে ;

       ক্ষণে ক্ষণে তীক্ষ্ণ ভর্ৎসনায়

                 বায়ু হেঁকে যায় ;

শূন্য যেন মেঘচ্ছিন্ন রৌদ্ররাগে পিঙ্গল জটায়

       দুর্বাসা হানিছে ক্রোধ রক্তচক্ষুকটাক্ষচ্ছটায়।

 

সে দুর্যোগে এনেছিনু তোমার বৈকালী,

                 কদম্বের ডালি।

            বাদলের বিষণ্ন ছায়াতে

                        গীতহারা প্রাতে

নৈরাশ্যজয়ী সে ফুল রেখেছিল কাজল প্রহরে

রৌদ্রের স্বপনছবি রোমাঞ্চিত কেশরে কেশরে।

 

মন্থর মেঘেরে যবে দিগন্তে ধাওয়ায়

          পুবন হাওয়ায়,

     কাঁদে বন শ্রাবণের রাতে

          প্লাবনের ঘাতে,

তখনো নির্ভীক নীপ গন্ধ দিল পাখির কুলায়ে,

বৃন্ত ছিল ক্লান্তিহীন, তখনো সে পড়ে নি ধুলায়।

     সেই ফুলে দৃঢ় প্রত্যাশার

          দিনু উপহার।

 

সজল সন্ধ্যায় তুমি এনেছিলে সখী,

     একটি কেতকী।

          তখনো হয় নি দীপ জ্বালা,

              ছিলাম নিরালা।

সারি-দেওয়া সুপারির আন্দোলিত সঘন সবুজে

জোনাকি ফিরিতেছিল অবিশ্রান্ত কারে খুঁজে খুঁজে।