মরণস্বপ্ন
কৃষ্ণপক্ষ প্রতিপদ। প্রথম সন্ধ্যায়
ম্লান চাঁদ দেখা দিল গগনের কোণে।
ক্ষুদ্র নৌকা
থরথরে চলিয়াছে পালভরে
কালস্রোতে যথা ভেসে যায়
অলস ভাবনাখানি আধোজাগা মনে।
এক পারে ভাঙা তীর ফেলিয়াছে ছায়া,
অন্য পারে ঢালু তট শুভ্র বালুকায়
মিশে যায়
চন্দ্রালোকে— ভেদ নাহি পড়ে চোখে—
বৈশাখের গঙ্গা কৃশকায়া
তীরতলে ধীরগতি অলস লীলায়।
স্বদেশ পুরব হতে বায়ু বহে আসে
দূর স্বজনের যেন বিরহের শ্বাস।
জাগ্রত আঁখির
আগে কখনো বা চাঁদ জাগে
কখনো বা প্রিয়মুখ ভাসে—
আধেক উলস প্রাণ আধেক উদাস।
ঘনচ্ছায়া আম্রকুঞ্জ উত্তরের তীরে—
যেন তারা সত্য নহে, স্মৃতি-উপবন।
তীর, তরু, গৃহ, পথ,
জ্যোৎস্নাপটে চিত্রবৎ—
পড়িয়াছে নীলাকাশনীরে
দূর মায়াজগতের ছায়ার মতন।
স্বপ্নাকুল আঁখি মুদি ভাবিতেছি মনে—
রাজহংস ভেসে যায় অপার আকাশে
দীর্ঘ শুভ্র পাখা
খুলি চন্দ্রালোক-পানে তুলি,
পৃষ্ঠে আমি কোমল শয়নে;
সুখের মরণসম ঘুমঘোর আসে।