চিত্রা

সারস ঘুমায়ে ছিল দীর্ঘ গ্রীবাখানি

ভঙ্গিভরে বাঁকাইয়া পৃষ্ঠে লয়ে টানি

ধূসর ডানার মাঝে ; রাজহংসদল

আকাশে বলাকা বাঁধি সত্বর-চঞ্চল

ত্যজি কোন্‌ দূরনদীসৈকতবিহার

উড়িয়া চলিতেছিল গলিতনীহার

কৈলাসের পানে। বহু বনগন্ধ বহে

অকস্মাৎ শ্রান্ত বায়ু উত্তপ্ত আগ্রহে

লুটায়ে পড়িতেছিল সুদীর্ঘ নিশ্বাসে

মুগ্ধ সরসীর বক্ষে স্নিগ্ধ বাহুপাশে।

 

 

মদন, বসন্তসখা, ব্যগ্র কৌতূহলে

লুকায়ে বসিয়া ছিল বকুলের তলে

পুষ্পাসনে, হেলায় হেলিয়ে তরু- ' পরে

প্রসারিয়া পদযুগ নবতৃণস্তরে।

পীত উত্তরীয়প্রান্ত লুণ্ঠিত ভূতলে,

গ্রন্থিত মালতীমালা কুঞ্চিত কুন্তলে

গৌর কণ্ঠতটে — সহাস্য কটাক্ষ করি

কৌতুকে হেরিতেছিল মোহিনী সুন্দরী

তরুণীর স্নানলীলা। অধীর চঞ্চল

উৎসুক অঙ্গুলি তার, নির্মল কোমল

বক্ষস্থল লক্ষ্য করি লয়ে পুষ্পশর

প্রতীক্ষা করিতেছিল নিজ অবসর।

গুঞ্জরি ফিরিতেছিল লক্ষ মধুকর

ফুলে ফুলে, ছায়াতলে সুপ্ত হরিণীরে

ক্ষণে ক্ষণে লেহন করিতেছিল ধীরে

বিমুগ্ধনয়ন মৃগ — বসন্ত-পরশে

পূর্ণ ছিল বনচ্ছায়া আলসে লালসে।

 

 

জলপ্রান্তে ক্ষুব্ধ ক্ষুণ্ন কম্পন রাখিয়া,