প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
অচ্ছোদসরসীনীরে রমণী যেদিন
নামিল স্নানের তরে, বসন্ত নবীন
সেদিন ফিরিতেছিল ভুবন ব্যাপিয়া
প্রথম প্রেমের মতো কাঁপিয়া কাঁপিয়া
ক্ষণে ক্ষণে শিহরি শিহরি। সমীরণ
প্রলাপ বকিতেছিল প্রচ্ছায়সঘন
পল্লবশয়নতলে, মধ্যাহ্নের জ্যোতি
মূর্ছিত বনের কোলে, কপোতদম্পতি
বসি শান্ত অকম্পিত চম্পকের ডালে
ঘন চঞ্চুচুম্বনের অবসরকালে
নিভৃতে করিতেছিল বিহ্বল কূজন।
তীরে শ্বেতশিলাতলে সুনীল বসন
লুটাইছে এক প্রান্তে স্খলিতগৌরব
অনাদৃত — শ্রীঅঙ্গের উত্তপ্ত সৌরভ
এখনো জড়িত তাহে — আয়ুপরিশেষ
মূর্ছাম্বিত দেহে যেন জীবনের লেশ —
লুটায় মেখলাখানি ত্যজি কটিদেশ
মৌন অপমানে। নূপুর রয়েছে পড়ি,
বক্ষের নিচোলবাস যায় গড়াগড়ি
ত্যজিয়া যুগল স্বর্গ কঠিন পাষাণে।
কনকদর্পণখানি চাহে শূন্য-পানে
কার মুখ স্মরি। স্বর্ণপাত্রে সুসজ্জিত
চন্দনকুঙ্কুমপঙ্ক, লুণ্ঠিত লজ্জিত
দুটি রক্ত শতদল, অম্লানসুন্দর
শ্বেতকরবীর মালা — ধৌত শুক্লাম্বর
লঘু স্বচ্ছ, পূর্ণিমার আকাশের মতো।
পরিপূর্ণ নীল নীর স্থির অনাহত —
কূলে কূলে প্রসারিত বিহ্বল গভীর
বুক-ভরা আলিঙ্গনরাশি। সরসীর
প্রান্তদেশে, বকুলের ঘনচ্ছায়াতলে