পলাতকা

          বিনুর মনে জাগছে বারেবার

নিখিলে আজ একলা শুধু আমিই কেবল তার ;

          কেউ কোথা নেই আর

     শ্বশুর ভাশুর সামনে পিছে ডাইনে বাঁয়ে ;

      সেই কথাটা মনে করে পুলক দিল গায়ে।

     বিলাসপুরের ইস্টেশনে বদল হবে গাড়ি ;

                   তাড়াতাড়ি

     নামতে হল। ছ-ঘণ্টা কাল থামতে হবে যাত্রীশালায়,

          মনে হল এ এক বিষম বালাই!

          বিনু বললে, “ কেন, এ তো বেশ। ”

     তার মনে আজ নেই যে খুশির শেষ।

পথের বাঁশি পায়ে পায়ে তারে যে আজ করেছে চঞ্চলা —

     আনন্দে তাই এক হল তার পৌঁছনো আর চলা।

          যাত্রীশালার দুয়ার খুলে আমায় বলে। —

          “ দেখো, দেখো, এক্কাগাড়ি কেমন চলে।

     আর দেখেছ বাছুরটি ওই, আ মরে যাই, চিকন নধর দেহ,

          মায়ের চোখে কী সুগভীর স্নেহ।

           ওই যেখানে দিঘির উঁচু পাড়ি —

     সিসু গাছের তলাটিতে পাঁচিলঘেরা ছোট্ট বাড়ি

                   ওই যে রেলের কাছে —

ইস্টেশনের বাবু থাকে?— আহা ওরা কেমন সুখে আছে। ”

 

 

যাত্রীঘরে বিছানাটা দিলেম পেতে,

বলে দিলেম, “ বিনু এবার চুপটি করে ঘুমোও আরামেতে। ”

                    প্ল্যাটফরমে চেয়ার টেনে

পড়তে শুরু করে দিলেম ইংরেজি এক নভেল কিনে এনে।

          গেল কত মালের গাড়ি, গেল প্যাসেঞ্জার,

               ঘণ্টা তিনেক হয়ে গেল পার।

          এমন সময় যাত্রীঘরের দ্বারের কাছে        

     বাহির হয়ে বললে বিনু, “ কথা একটা আছে। ”

                ঘরে ঢুকে দেখি কে - এক হিন্দুস্থানি মেয়ে