পলাতকা

                   ওগো অন্তর্যামী,

                   বিনুরে আজ জানাতে চাই আমি

          সেই দু-মাসের অর্ঘ্যে আমার বিষম বাকি,

                   পঁচিশ টাকার ফাঁকি।

          দিই যদি আজ রুক্‌মিণীরে লক্ষ টাকা

               তবুও তো ভরবে না সেই ফাঁকা।

বিনু যে সেই দু-মাসটিরে নিয়ে গেছে আপন সাথে,

          জানল না তো ফাঁকিসুদ্ধ দিলেম তারি হাতে।

 

 

          বিলাসপুরে নেমে আমি শুধাই সবার কাছে

               “ রুক্‌মিণী সে কোথায় আছে?”

                   প্রশ্ন শুনে অবাক মানে —

               রুক্‌মিণী কে তাই বা ক-জন জানে।

          অনেক ভেবে “ ঝামরু কুলির বউ ” বললেম যেই,

           বললে সবে, “ এখন তারা এখানে কেউ নেই। ”

               শুধাই আমি, “ কোথায় পাব তাকে। ”

ইস্টেশনের বড়োবাবু রেগে বলেন, “ সে খবর কে রাখে। ”

          টিকিটবাবু বললে হেসে, “ তারা মাসেক আগে

          গেছে চলে দার্জিলিঙে কিংবা খসরুবাগে,

                   কিংবা আরাকানে। ”

          শুধাই যত, “ ঠিকানা তার কেউ কি জানে। ” —

তারা কেবল বিরক্ত হয়, তার ঠিকানায় কার কাছে কোন্‌ কাজ।

          কেমন করে বোঝাই আমি — ওগো আমার আজ

          সবার চেয়ে তুচ্ছ তারে সবার চেয়ে পরম প্রয়োজন ;

          ফাঁকির বোঝা নামাতে মোর আছে সেই একজন।

                   “ এই দুটি মাস সুধায় দিলে ভরে ”

          বিনুর মুখে শেষ কথা সেই বইব কেমন করে।

                             রয়ে গেলেম দায়ী

                    মিথ্যা আমার হল চিরস্থায়ী।