নিদ্রিতা

রাজার ছেলে ফিরেছি দেশে দেশে

    সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার।

যেখানে যত মধুর মুখ আছে

    বাকি তো কিছু রাখি নি দেখিবার।

কেহ বা ডেকে কয়েছে দুটো কথা,

    কেহ বা চেয়ে করেছে আঁখি নত,

কাহারো হাসি ছুরির মতো কাটে

    কাহারো হাসি আঁখিজলেরই মতো।

গরবে কেহ গিয়েছে নিজ ঘর,

    কাঁদিয়া কেহ চেয়েছে ফিরে ফিরে।

কেহ বা কারে কহে নি কোনো কথা,

    কেহ বা গান গেয়েছে ধীরে ধীরে।

এমনি করে ফিরেছি দেশে দেশে।

    অনেক দূরে তেপান্তর-শেষে

ঘুমের দেশে ঘুমায় রাজবালা,

    তাহারি গলে এসেছি দিয়ে মালা।

 

একদা রাতে নবীন যৌবনে

   স্বপ্ন হতে উঠিনু চমকিয়া,

বাহিরে এসে দাঁড়ানু একবার

    ধরার পানে দেখিনু নিরখিয়া।

শীর্ণ হয়ে এসেছে শুকতারা,

    পূর্বতটে হতেছে নিশি ভোর।

আকাশ-কোণে বিকাশে জাগরণ,

   ধরণীতলে ভাঙে নি ঘুমঘোর।

সমুখে পড়ে দীর্ঘ রাজপথ,

   দু-ধারে তারি দাঁড়ায়ে তরুসার,

নয়ন মেলি সুদূর-পানে চেয়ে

    আপন মনে ভাবিনু একবার—

আমারি মতো আজি এ নিশিশেষে