সোনার তরী

ধরার মাঝে নূতন কোন্‌ দেশে,

    দুগ্ধফেনশয়ন করি আলা

    স্বপ্ন দেখে ঘুমায়ে রাজবালা।

 

অশ্ব চড়ি তখনি বাহিরিনু,

    কত যে দেশ-বিদেশ হনু পার।

একদা এক ধূসর সন্ধ্যায়

    ঘুমের দেশে লভিনু পুরদ্বার।

সবাই সেথা অচল অচেতন,

    কোথাও জেগে নাইকো জনপ্রাণী,

নদীর তীরে জলের কলতানে

    ঘুমায়ে আছে বিপুল পুরীখানি।

ফেলিতে পদ সাহস নাহি মানি,

    নিমেষে পাছে সকল দেশ জাগে।

প্রাসাদমাঝে পশিনু সাবধানে,

    শঙ্কা মোর চলিল আগে আগে।

ঘুমায় রাজা, ঘুমায় রানীমাতা,

কুমার-সাথে ঘুমায় রাজভ্রাতা;

    একটি ঘরে রত্নদীপ জ্বালা,

    ঘুমায়ে সেথা রয়েছে রাজবালা।

 

কমলফুলবিমল শেজখানি,

    নিলীন তাহে কোমল তনুলতা।

মুখের পানে চাহিনু অনিমেষে,

    বাজিল বুকে সুখের মতো ব্যথা।

মেঘের মতো গুচ্ছ কেশরাশি

    শিথান ঢাকি পড়েছে ভারে ভারে;

একটি বাহু বক্ষ-’পরে পড়ি,

    একটি বাহু লুটায় এক ধারে।

আঁচলখানি পড়েছে খসি পাশে,

    কাঁচলখানি পড়িবে বুঝি টুটি;

পত্রপুটে রয়েছে যেন ঢাকা